Google AdMob কি? গুগল এডমোব থেকে আয় করার সকল উপায়

গুগল এডমোব কি? এডমোব থেকে আয়, এখন বর্তমানে আমরা দৈনিক সবাই নানা প্রয়োজনে নানা ধরনের এপ গুগল প্লে স্টোর থেকে ইনস্টল করি। কেউ আমরা ফটো এডিট সফটওয়্যার ইন্সটল করে থাকি।

আবার কেউ ডাউনলোড করার সফটওয়্যার ইন্সটল করে থাকে। কেউ আবার গেমস সফটওয়্যার ইন্সটল করে থাকে ইত্যাদি নানা সফটওয়্যার প্লে স্টোর থেকে ইন্সটল করে থাকে।

আমরা অনেকেই লক্ষ্য করি এসব অ্যাপস চালানোর সময় এপের মধ্যে অনেক ধরণের বিজ্ঞাপন আসে বা ads সু করে। আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি এসব বিজ্ঞাপন কেন আসে কোথা থেকে আসে?

কিভাবে কোথা থেকে আসে? কি লাভ  এসব বিজ্ঞাপনের? আজকে আপনাদের এ Google AdMob বিস্তারিত জানাব তাই এই পোস্ট শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ পড়ুন।

এখন যদি আপনার প্রশ্ন থাকে কেন এপের মধ্যে এমন বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। তাহলে তার সহজ সরল উত্তর হচ্ছে এপ থেকে টাকা আয় করার জন্য এপের মালিক এসব এড যুক্ত করেছে।

আর যদি প্রশ্ন থাকে কোথা থেকে এসব এড পাই তারা তাহলে তার উত্তর হলো Google admob থেকে।

Google Admob গুগলের একটি অঙ্গসংগঠন যেটি Android এবং IOS এপের মধ্যে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। এই গুগল এডমোব ব্যবহার করে অনেকেই ঘরে বসে হাজার হাজার টাকা আয় করছে।

এডমোব থেকে আয় করার জন্য আপনার একটি এপ থাকতে হবে যেখানে আপনি বিজ্ঞাপন বসাবেন।

বর্তমানে অনেক বড় বড় এপ কোম্পানি গুগল এডমোব থেকে আয়কে একটি ব্যবসায় রুপান্তর করেছে এবং তারা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এপ প্লে স্টোরে পাবলিশ করে ভালো টাকা আয় করছে।

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব Google Admob কি? গুগল এডমোব থেকে আয় করার উপায়গুলো নিয়ে বিস্তারিত সকল নানা বিষয় তথ্য।

Google AdMob কি?

Google admob হলো গুগলের একটি অঙ্গসংগঠন। ২০০৬ সালের ১০ই এপ্রিল Omar Hamoui নামের ব্যাক্তি দ্বারা এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি মূলত গুগোলের একটি বিজ্ঞাপন দাতা প্রতিষ্ঠান যেটি বিভিন্ন মোবাইল এপের জন্য বিজ্ঞাপন প্রোভাইড করে৷

আমরা সবাইতো গুগল এডসেন্স চিনি গুগল এডসেন্স শুধু ইউটিউব ভিডিও এবং ওয়েবসাইটের জন্য বিজ্ঞাপন প্রোভাইড করে৷

আর Google Admob মোবাইল এপ্লিকেশনের জন্য বিজ্ঞাপন প্রোভাইড করে থাকে। Google Admob থেকে তারাই আয় করতে পারবে যাদের নিজস্ব কোন এপ্লিকেশন আছে এবং যেটি গুগল প্লে স্টোরে আপলোড আছে।

এপ্লিকেশন এর মালিক যদি এপ্লিকেশনটির সাথে Google Admob সংযুক্ত করে দেয় তাহলে এপের মধ্যে নানা ধরনের ব্যনার এবং ভিডিও এড শো করবে।

আপনার  যখন কেউ এপটি ইনস্টল করে ব্যবহার করবে তখন সে এসব বিজ্ঞাপন দেখবে এবং এপের মালিক প্রতি এড ইমপ্রেশন এবং ক্লিকের জন্য নির্দিষ্ট কিছু টাকা আয় করবে। এটিই হলো Google Admob এর কাজ।

আর বিভিন্ন কোম্পানি গুগলে তাদের প্রমোশনের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে গুগলে, Google admob মূলত ঐসব বিজ্ঞাপনই এপের মধ্যে দেখার। Google Admob এর মজার বিষয় হলো এটির বিজ্ঞাপন গুলো মোবাইল ফ্রেন্ডলি হয়।

২০০৯ সালের নভেম্বর মাসের মধ্যে Admob গুগলকে $750 million dollar আয় করিয়ে দিল তার পর থেকেই Admob গুগলেরই একটি অঙ্গসংগঠন হিসেবে কাজ করে।

যদি আরেকটু সহজ ভাবে বললে Google Admob হলো এপ পাবলিশারদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে তারা তাদের এপকে মনিটাইজ করাতে পারবেন। তাহলে হয়ত এখন বুঝতে পেরেছেন গুগল এডমোব(Google admob) কি।

গুগোল এডমোব এবং এডসেন্স দুটিই গুগোলের অঙ্গ সংস্থা। এবং দুটিই গুগোলের এড প্রোভাইডার এটাও সত্য।
তারপরও কেন এডমোব এবং এডসেন্স কে ভিন্ন বলা হয়? আসলে এডমোব এবং এডসেন্স ভিন্ন নয় কিন্তু তাদের কাজের ধরণে একটু ভিন্নতা আছে।

চলুন এটি ভালোভাবে জেনে নিই

যখন কোন ব্লগ ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব ভিডিওতে গুগোলের এড বসিয়ে মনিটাইজ করতে চান তখন আপনাকে এডসেন্স একাউন্ট খুলতে হবে।এবং ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলের জন্য বিজ্ঞাপন এডসেন্সই প্রোভাইড করবে আর আপনার পেমেন্ট আপনি এডসেন্স থেকে পাবেন।

অপরদিকে আপনি যখন আপনার কোন এপকে গুগল এডস দ্বারা মনিটাইজ করতে চান তখন আপনাকে এডমোব একাউন্ট খুলতে হবে।এডমোব থেকে আপনার এপের জন্য এডস প্রোভাইড করা হবে।এবং আপনার যাবতীয় পেমেন্টের বিষয় গুলোও এডমোবে হবে।

সুতরাং এডসেন্স এবং এডমোবের মধ্যে মূল পার্থক্য হলো এডসেন্সের মাধ্যমে আয় করকে হলে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে আর এডমোব এর মাধ্যমে আয় করতে আপনাদের দরকার হবে একটি মোবাইল এপ্লিকেশন বা এপ।

আমি আশা করি এডমোব এবং এডসেন্সর মধ্যকার পার্থক্য বুঝেছেন। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে কেন গুগল আমাদের তার এসব অঙ্গসংগঠনের মাধ্যমে টাকা দিচ্ছে?

পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত একটি সার্চ ইঞ্জিন হলো গুগল। গুগলের যেই পরিমাণ ইউজার রয়েছে সারা বিশ্বব্যাপি তা অন্য কোন কোম্পানির নেই। এই বিশাল সংখ্যক ইউজার থেকে গুগল আয় করে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে।

অর্থাৎ অনেক ছোট বড় কোম্পানি গুগলকে টাকা দেয় তাদের বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য। গুগল তাদের ঐ বিজ্ঞাপনগুলো ইউটিউব ভিডিও, ওয়েবসাইট, এপের মধ্যে দেখায়।

তারপর আয়কৃত অর্থের একটি অংশ গুগল তার পাবলিশারদের দিয়ে থাকে। এভাবেই মূলত গুগোল আয় করে এবং আমরা গুগল থেকে আয় করতে পারি।

সুতরাং এখন আপনি বুঝতেই পারছেন গুগল আমাদের এমনি এমনি টাকা দিচ্ছে আমাদের কন্টেন্ট বা এপে বিজ্ঞাপন বসিয়ে গুগল টাকা আয় করছে এবং আমাদেরকে সেই টাকার একটি অংশ রেভিনিউ হিসেবে দেয়। চলুন এখন জেনে আসি কিভাবে এডমোব থেকে আয় করবেন।

Google AdMob এডমোব থেকে আয়

গুগল এডমোব কি তা তো বুঝলেন এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে এডমোব থেকে আয় করা যায়। নিচে স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনা করা হয়েছে গুগল এডমোব থেকে আয় নিয়ে।

১) যদি আপনি গুগল এডমোব থেকে ইনকাম করতে চান তাহলে আপনার সর্বপ্রথম লাগবে একটি মোবাইল এপ্লিকেশন। যেখানে আপনি এড বসিয়ে ইনকাম করবেন।

আপনাদের জন্য আরো পোস্ট:

২) একটি মোবাইল এপ বা এপ্লিকেশন তৈরী করার জন্য আপনাকে আপনাকে একজন এপ ডেভলপার হায়ার করতে হবে। যে আপনাকে আপনার আইডিয়া অনুযায়ী একটি এপ তৈরি করে দিবে। আবার যদি আপনার নিজের এপ তৈরি নিয়ে উপযুক্ত ধারনা থাকে তাহলে নিজেই নিজের জন্য একটি এপ তৈরি করতে পারেন

৩) আপনার এপ তৈরির পর আপনার এপের মধ্যে বিজ্ঞাপন দেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে আর তার জন্য আপনাকে গুগল এডমোবে আপনার জিমেইলে দিয়ে একটি ফ্রী একাউন্ট তৈরি করতে হবে।

৪) একাউন্ট তৈরি করার পর আপনি একাউন্টে লগ ইন করলে একটি ড্যাশবোর্ড দেখবেন যেখানের বাম দিকে “Apps” লিখা একটি অপশন আছে সেখানে ক্লিক করবেন। তারপরে “Add your first app” অপশনটিতে ক্লিক করে আপনার এপটি Google Admob একাউন্টে জমা দিবেন।

৫) এখন তো হয়ে গেল আপনার এপ জমা দেওয়া এখন কাজ হলো এড বসানো। “create ad unit ” অপশনে যাওয়ার পর আপনি অনেক ধরণের এড ইউনিট দেখবেন video ad, banner ad ইত্যাদি। আপনার প্রয়োজন মতো এড তৈরি করবেন তারপর প্রতিটা এড ইউনিটের জন্য আপনাকে আলাদা আলাদা কোড দিবে সেই কোড গুলো নিয়ে আপনার এপের যেসব জায়গায় এড বসাবেন ঐসব জায়গায় কোড গুলো বসান।

৬) আগে উপরোক্ত স্টেপ গুলো ফলো করলেই এপের মধ্যে বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু হতো কিন্তু এখন এপটি গুগল প্লে স্টোরে আপলোড দেওয়া ছাড়া বিজ্ঞাপন দেখায় না তাই গুগল প্লে স্টোরে আপলোড দিতে হবে আপনার এপটি।

৭) এখন আপনার এপটি প্লে স্টোর থেকে যদি কেউ ইনস্টল করে তাহলে সে এপটির মধ্যে Google admob এর বিজ্ঞাপন দেখতে পারবে।

৮) প্রতি এড ক্লিক এবং ইমপ্রেশন এর জন্য আপনার গুগল এডমোব একাউন্টে টাকা জমা হবে। এভাবে যদি আপনার একাউন্টে ১০০ ডলার ইনকাম হয় তাহলে আপনি সরাসরি ব্যাংকে টাকা তুলে নিতে পারবেন।

আপনার এপটি যত বেশি ডাউনলোড হবে আপনার ইনকাম তত বেশি হবে। তাই যদি এডমোব থেকে আয় করতে চান আপনার এপটি যথাযথভাবে মার্কেটিং করতে হবে।

এডমোব থেকে আয়ের জন্য দরকার একটি এন্ড্রয়েড এপ। আমাদের মধ্যে অনেকেই এডমোব থেকে আয় করতে চায় কিন্তু নিজের কোন এপ না থাকার কারনে পারি না। তাই আমি আজকে আপনাদের বলব কিভাবে আপনি নিজেই একটি নিজের এপ তৈরি করতে পারবেন।

এনড্রোয়েড এপ তৈরির ২ টি উপায় আছেঃ-

চলুন এবার একটু বিস্তারিত জানি এই দুটি উপায় নিয়ে।

Programing language দিয়ে Android App তৈরি

কোডিং বা প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে আপনি অনেক প্রফেশনাল মানের এপ তৈরি করতে পারবেন। বলতে গেলে এপ তৈরির সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হলো Programming language। Programing এর মাধ্যমে আপনি আপনার মনের ইচ্ছামতো এপ তৈরি করতে পারবেন। কিন্তু এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে Programing language টা কি?

সহজভাবে বলতে গেলে programing language এমন একটি ভাষা যেটির মাধ্যমে নানা যন্ত্রপাতি বিশেষ করে কম্পিউটারের নানা বিষয় নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং এই ভাষা দিয়ে যেকোন software বানানো এবং নিয়ন্ত্রণ করা যায়। পৃথিবীতে কয়েক ধরনের Programing language রয়েছে। চলুন কয়েকটি Programing language সম্পর্কে জানে নিই।

পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় এবং সহজ একটি প্রোগ্রামিং language হলো Python। এই ল্যাঙ্গুয়েজটি অনেক শক্তিশালী একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। শুধু Andriod apps-ই নয় এই language দিয়ে অনেক বড় বড় ওয়েবসাইটও তৈরি করা যায়।

অনেকেই মনে html, css, javascript দিয়ে শুধু মাত্র ওয়েবসাইট তৈরি সম্ভব। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। Adobe phonegap framework ব্যবহার করে এই ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে আপনি আপনার পছন্দ মতো এপ তৈরি করতে পারবেন। বর্তমানে এই প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে যেকোন এপই তৈরি সম্ভব।

Android app তৈরির জন্য সবচেয়ে ব্যবহৃত হয় Java। এর মাধ্যমে যেকোন ধরনের এপ বিল্ড এবং ডেভলপমেন্ট করা সম্ভব। বর্তমানে গুগল প্লে স্টোরে বেশিরভাগ এপই তৈরি করা হয়েছে এই প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে। নতুনদের জন্য এপ Java-ই সবচেয়ে ভালো।

যদি আপনি এপ তৈরির জন্য Java ব্যবহার করেন এবং Java-র সাথে অন্য কোন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ যুক্ত করতে চান তাহলে আপনাকে C# যুক্ত করতে হবে। এই C# এর বিশাল কালেকশন থাকায় আপনার কোডে যেকোন বিষয়ে সমস্যা হলে নিমিষেই সেই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।

C+ দিয়েও এনড্রোয়েড এপ বিল্ড এবং ডেভলপমেন্ট করা যায়। কিন্তু তুলনামূলক কঠিন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ হওয়ায় নতুনদের জন্য এটি শেখা কষ্টকর হতে পারে।

২০১৯ সালের গুগল অফিশিয়ালি প্রকাশ করে এই programming language টি। এটি Java-র বিকল্প হিসেবে কাজ করে তাই যাদের জাভা কঠিন মনে হয় তারা এটি শিখতে পারেন।Java-র সাথে এই ল্যাঙ্গুয়েজটার বেশ কিছু সমন্বয় আছে তাই নতুনদের জন্য Kotlin আরেকটি বেস্ট Programming language।

আপনি উপরের কোন একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে নিজেই নিজের এপ তৈরি করতে পারবেন। এছাড়াও বর্তমানে এপ ডেভলপারদের যথেষ্ট ডিমান্ড রয়েছে। আপনি কোন একটি language-এ এক্সপার্ট হয়ে গেলে বিভিন্ন ফ্রিলেন্সিং মার্কেটপ্লেসেও কাজ করতে পারবেন।

অনেকের কাছে প্রোগ্রামিং শেখাটা বিরক্তিকর বা কঠিন মনে হয় তাই তাদের জন্য কোডিং বা প্রোগ্রামিং ছাড়া এপ তৈরির উপায় দেখে আসি।

App making website দিয়ে এপ তৈরি

কোডিং শেখাটা অনেক সময় সাপেক্ষ এবং কষ্টকর তাই অনেকেই কোডিং ছাড়া এপ তৈরি করতে চায়। তাদের জন্য এখন কিছু ওয়েবসাইট শেয়ার করব যেগুলোর মাধ্যমে আপনিও কোডিং ছাড়া একটি প্রোফেশনাল এপ তৈরি করতে পারবেন। চলুন জেনে নিই সেই ওয়েবসাইট গুলো সম্পর্কে।

একটি জনপ্রিয় এপ মেকিং প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে BuildFire। তাদের তথ্য মতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার এপ ডেভেলপ হয়েছে এই ওয়েবসাইটে। ছোট খাটো কোম্পানি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এপ তৈরির জন্য BuildFire একটি উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম।

আপনি যদি একটি প্রোফেশনাল এপ তৈরির কথা চিন্তা করেন তাহলে আপনাকে সর্বপ্রথম এই ওয়েবসাইট সাজেস্ট করব। বাকি সব ওয়েবসাইট থেকেও এই ওয়েবসাইট অনেক ভালো এবং এটির মাধ্যমে একদম প্রফেশনালদের মতো এপ তৈরি করতে পারবেন আপনি।

রিসার্চ করে জানলাম এই ওয়েবসাইটের মালিক নেদারল্যান্ডস এর একজন ওয়েব ডেভলপার। যারা কোডিং জানে না কিন্তু এপ তৈরি করতে চায় তাদের কথা চিন্তা করে এই ওয়েবসাইটটি তৈরি করেন তিনি।

এই ওয়েবসাইটের প্রিমিয়াম প্লেন নিলে আপনি সব ধরনের ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু এর ফ্রী প্লেনও আছে যেখানে হয়ত কিছু ফিচার ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা থাকবে।

ছোটখাটো কিংবা মিডরেন্জের যেকোন এপ তৈরি করতে পারবেন এই ওয়েবসাইটে। শুধু মাত্র সিম্পল ড্রাগ এন্ড ড্রপ করে আপনি অনেক সুন্দর সুন্দর ডিজাইনের এপ তৈরি করতে পারবেন। অসংখ্য এপ টেমপ্লেট এবং ডিজাইনের কালেকশন রয়েছে এই ওয়েবসাইটে।

কোন প্রকার কোডিং নলেজ ছাড়া এপ তৈরির বেস্ট ওয়েবসাইট গুলোর একটি হলো এটি।এটিকে বেস্ট বলার কারন হলো অনেক প্রিমিয়াম ফিচার এটিতে একদম বিনামূল্যে দিচ্ছে। এবং এটি ব্যবহার তুলনামূলক সহজ। আপনার যদি অনলাইন বিষয়গুলো সম্পর্কে নূন্যতম ধারণা থাকে তাহলে আপনি এই ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারবেন।

এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ওয়েবসাইট আছে। সবগুলো ওয়েবসাইট সম্পর্কে একটি আর্টিকেলে বলা সম্ভব নয়। তাই আপনারা গুগল এবং ইউটিউবে রিসার্চ করে নিবে এই সম্পর্কে।

শুধু এপ তৈরি করলেতো গুগল আপনাকে টাকা দিবে না৷ টাকা আয় করার জন্য আপনাকে আপনার এপটি গুগল প্লে স্টোরে আপলোড করতে হবে। চলুন জেনে নিই কিভাবে আপনার তৈরি করা এপ গুগল প্লে স্টোরে আপলোড করবেন।

পৃথিবীর বিশাল সংখ্যক মানুষ এপ ডাউনলোড করার জন্য গুগল প্লে স্টোরই ব্যবহার করে। এটি অনেক বেশি ব্যবহৃত এবং বিখ্যাত এপ ডাউনলোডিং সাইট। আপনার এপটি যদি আপনি গুগোল প্লে স্টোরে পাবলিস করেন তাহলে আপনি খুব সহজে আপনার এপের জন্য অনেক গ্রাহক পেয়ে যাবেন।

তাই প্রত্যেক এপ ডেভলপারই তাদের এপ গুগল প্লে স্টোরে আপলোড করে। আর বর্তমানে Google Admob এর নিয়ম অনুসারে প্লে স্টোরে কোন এপ পাবলিশ না হওয়া পর্যন্ত সেটিতে কোন প্রকার বিজ্ঞাপন দেখাবে না।

চলুন দেখে আসি কিভাবে আপনার এপটি Google play store এ আপলোড করবেন।

Play store এ আপনার এপ পাবলিশ করার জন্য নিম্নলিখিত জিনিস গুলো থাকতে হবেঃ-

  1. একটি Google Play Console একাউন্ট
  2. আপনার তৈরি করা এপের Apk file
  3. App icon: 512×512
  4. আপনার এপ থেকে নেওয়া ২,৩ টি screenshots.
  5. Feature image:1024×500

এই ৫টি জিনিস যদি আপনার কাছে থাকে তাহলে আপনি আপনার এপ প্লে স্টোরে আপলোড করতে পারবেন। চলুন দেখে আসি কিভাবে আপনার এপটি গুগল প্লে স্টোরে আপলোড করবেন।

আরো পড়ুন..

প্রথমে আপনাকে গুগল প্লে স্টোরে Developer Account খুলতে হবে।

তারপরে একটি Google Wallet Merchant একাউন্ট খুলতে হবে। এবং এই merchant একাউন্টকে পূর্বে তৈরি developer একাউন্টের সাথে যুক্ত করতে হবে।

এপটিকে আপলোড করবেন।

এপ আপলোডের পরে আপনাকে আবার Android Package Kit আপলোড করতে হবে।

Apps-এ Content Rating যুক্ত করতে হবে।

তারপরে Price এবং ডিস্ট্রিবিউশন মডেল সিলেক্ট করতে হবে।

সব কিছু পুনরায় চেক করে Publish করতে হবে।

এভাবেই মূলত Google play store-এ এপস পাবলিস করা হয়। এপস পাবলিশ করার ক্ষেত্রে অনেক সুক্ষ বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হয় যেগুলো লিখে বোঝানো সম্ভব নয় তাই এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত ভিডিও ইউটিউব থেকে নিবেন।

এপ তৈরির মূল উদ্দেশ্য হলো গুগল এডমোব থেকে টাকা আয় করা। আর তার জন্য আমাদের গুগল এডমোব এর বিজ্ঞাপন আমাদের এপে বসাতে হবে। তার জন্য গুগল এডমোব পাবলিশার একাউন্টের জন্য apply করতে হবে। আর যদি আপনার পাবলিশার একাউন্ট এপ্রুভ না হয় আপনি এপে বিজ্ঞাপন বসাতে পারবেন না যার ফলে আয়ও হবে না।

অনেকেই আছেন এপ বানিয়ে লক্ষ টাকা আয় করার স্বপ্ন নিয়ে এপ তৈরি করে কিন্তু তখন তিনি একজন পাবলিশার হওয়ার জন্য apply করে কিন্তু অনেকেই রিজেক্ট করে দেওয়া হয়। এভাবে বার বার রিজেক্ট করে দেওয়ার ফলে অনেকেই হতাশ হয়ে আশা ছেড়ে দেন।

আসলে এডমোব একাউন্ট এপ্রুভ করার কারন হলো গুগল এডমোব গাইডলাইন গুলোকে অমান্য করা। তাহলে এখন চলুন আমরা গুগল এডমোব গাইডলাইন গুলো দেখে নিই।

গুগল থেকে আপনি নিঃসন্দেহে অনেক টাকা আয় করতে পারবেন এবং অনেকেই করছে। তবে গুগল থেকে আয করার জন্য তাদের নিজস্ব কিছু নিয়ম নীতি আছে যা আপনাকে অবশ্যই অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

এবং গুগল তাদের এই নীতিমালা গুলোর উপর খুবই বেশি কঠোর। তেমনি এডমোব থেকে আয় করতে হলে গুগল এডমোবের কিছু নিয়ম নীতি সম্পর্কে আপনাকে অবগত থাকতে হবে।

চলুন জেনে আসি সেগুলো সম্পর্কে।

গুগলের পলিসি অনুযায়ী হ্যাকিং কিংবা ভাইরাস জাতীয় মোবাইল এপস গুলো অবৈধ। আপনার এপটি যদি হ্যাকিং রিলেটেড হয় বা আপনার এপে যদি কোন ভাইরাস থাকে তাহলে আপনার এপটি এডমোব দ্বারা মনিটাইজ হবে না।

গুগল যেই বিষয় গুলোকে একদম পছন্দ করে না তাদের মধ্যে অন্যতম একটি বিষয় হলো copyright content। আপনার এপের মধ্যে থাকা content যদি অন্য কারো কাছ থেকে কপি করা হয় তাহলে আপনার এপটি মনিটাইজ হবে না।

এটি খুব গুরত্বপূর্ণ বিষয়। Child sex একটি ভয়াবহ ধরনের অপরাধ। আপনার এপের মধ্যে যদি child sex রিলেটেড কোন কন্টেন্ট থাকে তাহলে আপনার এপটি কখনোই গুগল মনিটাইজ করবে না।

ইন্টারনেটের এমন অনেক কন্টেন্ট আছে যেগুলো অন্যকেউ তাদের নামে রেজিস্ট্রি করে রেখেছে। এসব কন্টেন্ট অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বে-আইনি। যদি আপনি এমন কোন কন্টেন্ট ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনার এপ মনিটাইজ হবে না।

আসলে আপনি যদি স্থায়ীভাবে আয় করতে চান তাহলে সৎ থাকবেন। কোন ধরনের অবৈধ কাজ করবেন না বেশি ইনকামের লোভে পড়ে। কারন গুগল আপনার আমার চেয়েও বেশি চালাক। আপনি যতই চালাকি করেন গুগল সেটা আজ না হয় কাল ধরে ফেলবে তারপর আপনার একাউন্ট ব্যন করে দিবে। তাই নিরাপদ ভাবে কাজ করতে হলে এবং এডমোব এপ্রুভাল দ্রুত পেতে হলে সৎ ভাবে কাজ করুন।

আপনি যদি উপরের সমস্ত কাজ এখন পর্যন্ত সফলভাবে করে আসতে পারেন তাহলে এখন আপনার কাজ হলো একটি এডমোব একাউন্ট তৈরি করা। এডমোব একাউন্ট তৈরি করা খুব সহজ কিন্তু নতুনদের অনেক সময় সমস্যা হয় তাই তাদের উদ্দেশ্যে স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনা করছি।

আপনাকে www.admob.com এই ওয়েবসাইটে যেতে হবে।এটি এডমোবের অফিশিয়াল সাইট।

তারপরে Sign Up বাটনে ক্লিক করে আপনার জিমেইল দিতে হবে এবং তার পরে Start now এ ক্লিক করুন।

এবার আপনাকে আপনার Country এবং Time zone সেট করি নিতে হবে। তারা কিছু টার্মস এন্ড কন্ডিশন দিবে সেগুলো পড়ে আপনি বক্সে টিক মার্ক দিয়ে পরের ধাপে চলে যাবেন।

তারপর বিভিন্ন ভেরিফিকেশনের অপশন আসবে সেগুলো সিলেক্ট করতে হবে।

এবার আপনার মোবাইল নম্বর চাইবে। কান্ট্রি কোড দিয়ে আপনার নম্বরটি বসিয়ে ভেরিফাই করে নিবেন৷

উক্ত প্রক্রিয়াগুলো সব সঠিক ভাবে শেষ হলে আপনাকে এডমোবের ডেশবোর্ডে নিয়ে যাবে।

অনেকের মনে এমন প্রশ্ন আসতে পারে এডমোব থেকে কত টাকা আয় করা যায় বা এডমোব এর ইনকাম কেমন হয়? আসলে কত টাকা আয় করা যায় তার কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই গুগলের মাধ্যমে লক্ষ থেকে কোটি টাকা আয় করাও অসম্ভব কিছুনা।

কিন্তু এডমোব থেকে আয়ের জন্য আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে প্রচুর। এবং আপনার এপটিকে মার্কেটিং করতে হবে।আপনার নিজের দক্ষতাকে বাড়াতে হবে।

আপনার কাজের দক্ষতাই ঠিক করে দেবে আপনি কেমন টাকা আয় করবেন। আর এক রাতে এডমোব থেকে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখলে আপনি কিছুই করতে পারবেন না।

তাই ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করতে থাকুন অবশ্যই একদিন আপনি হাজার হাজার ডলার আয় করতে পারবেন এবং আয় করা সম্ভব। চলুন এখন এমন কিছু টিপস শেয়ার করি আপনাদের যা আপনার এডমোব ইনকামকে বৃদ্ধি করতে পারে।

Admob এর ইনকাম নির্ভর করে ৩ টি বিষয়ের উপর। ঐ ৩টি বিষয়ের উপর আপনি সচেতন হলে আপনার ইনকাম বাড়বে।
আপনার এপটি কোন ক্যাটাগরির সেটির উপর আপনার এডমোবের ইনকাম নির্ভর করবে।তার মানে হচ্ছে আপনার এপটি কি শিক্ষা মূলক, বিনোদন নাকি অন্য কোন বিষয় নিয়ে।

চেষ্টা করবেন এমন কোন বিষয় নিয়ে আপনার এপ তৈরি করতে যেই বিষয়টার চাহিদা বেশি আছে।যার ফলে আপনি ইউজার বেশি পাবেন। আর ইউজার বেশি মানে ইনকাম বেশি।

আপনার এপের ব্যবহারকারী কোন দেশের তার উপর নির্ভর করে আপনার CPC। CPC যদি বেশি হয় তাহলে ইনকাম বেশি আর কম হলে ইনকামও কম। সাধারণত ইউরোপ কান্ট্রি গুলোর CPC অনেক বেশি হয়।

আপনার এপের মধ্যে যতবেশি ইউজার থাকবে আপনার আয় তত বৃদ্ধি পাবে। আর আপনার ইউজার বাড়ানোর জন্য আপনাকে কয়েকটি বিষয়ের উপর খেয়াল রাখতে হবে।

সুন্দর এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টাফেস।

এপে কোন প্রকার সিস্টেম বাগ থাকতে পারবেন না।

এপটি ১০০% সিকিউর হতে হবে।

এই বিষয় গুলোর উপর নজর রাখলে আপনার এপ সহজেই জনপ্রিয় হবে।

অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে কিভাবে এডমোব থেকে আয়কৃত টাকা আমি হাতে পাব?

আপনার এডমোব একাউন্টে যদি ১০০ ডলার হয়ে যায় তাহলে বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যাংকিং সাপোর্ট করে এমন যেকোনো ব্যাংক একাউন্ট আপনার এডমোবের সাথে কানেক্ট করে টাকাটা সরাসরি ব্যাংকেই নিতে পারবেন।

আমাদের কথা ,

এই পোস্টটি শুধু আপনাদের তথ্য শেয়ার করার উদ্দেশ্যেই লেখা। পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।

আরো পড়ুন..

Leave a Comment