২০২৩ সালে ওয়েবসাইট থেকে আয় করার সহজ উপায়

ওয়েবসাইট থেকে আয় করার উপায় ২০২৩ : অনলাইন আয়ের উপায়ের মধ্যে ওয়েবসাইট থেকে আয় অধিক জনপ্রিয় মাধ্যম। এবং একটি ওয়েবসাইট থেকে দীর্ঘস্থায়ী এবং ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। তাই আজকের এই পোষ্ট আপনাদের জন্য কিভাবে ওয়েবসাইট থেকে আয় করা যায় সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করব তাই এই পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়ুন?

বর্তমান দিন দিন মানুষ অনলাইন নির্ভর হয়ে যাওয়ায় এর সম্ভাবনা অনেক গুন বেড়ে যাচ্ছে। এখন ছোট বড় সবাই অনলাইনের প্রতি আগ্রহ হচ্ছে কিভাবে অনলাইন থেকে ইনকাম করা যায়। বর্তমান সময়ের এই জনপ্রিয় অনলাইন আয়ের মাধ্যমেটি আপনিও বেছে নিতে পারেন আপনার ক্যারিয়ার হিসেবে বা আপনার বাড়তি ইনকাম এর পথ হিসেবে।

ওয়েবসাইট থেকে আয় করার উপায় ২০২৩ (Earn From Website)

অনলাইন ইনকাম dailytk.com এই পোষ্টের মাধ্যমে, কিভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন। কিভাবে আপনি একটি নিজের ওয়েবসাইট (Website) তৈরী করে সেখান থেকে টাকা আয় করবেন এই সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

এটাও বলতে পারি, এই লেখাটি পড়ে আপনি নিজে ওয়েবসাইট তৈরি করে অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন, যদি আপনার ভেতরে ইচ্ছা, ধৈর্য আর পরিশ্রম করার মনমানসিকতা থাকে।

আপনারা আরও বিষয় সম্বন্ধে জানতে পারবেন যে,পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল কিভাবে তাদের ওয়েবসাইটের সাহায্যে কোটি কোটি ডলার আয় করে সে সম্পর্কেও জানতে পারবেন।

ওয়েবসাইট থেকে আয়

আমাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমি সর্বপ্রথম ২০২০ সালে ওয়েবসাইট তৈরি করি। তখন আমি ঠিক আপনাদের মতন ছিলাম কিছুই জানতাম না বা কি করতে হবে। কিছুই বুঝতাম না তাই ইচ্ছা শক্তি ও ধৈর্য সহকারে আমি আমার নিজের মতন কাজ চালিয়ে নিয়েছিলাম তাই আমি সাকসেস হতে পেরেছি। যদিও শুরুর দিকে আমি তেমন একটা আমার ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করতে পারেনি। তবে বর্তমানে আমার ওয়েবসাইট থেকে আমি ভালো পরিমান টাকা ইনকাম করি।

অনলাইন ইনকাম Website থেকে আয় করা আমার মতে, অতটা কঠিনও না আবার অতটা সহজ নয়। ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে চাইলে আপনার ধৈর্য ধরে কাজ করে যাওয়ার মন মানসিকতা থাকতে হবে। কেননা শুরুতে ওয়েবসাইট থেকে তেমন একটা ইনকাম হয় না। প্রথম কয়েক মাস আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে ধৈর্য হারালে চলবে না।

আরো পড়ুন..

আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি এটা বলতে পারি যে, একটা ওয়েবসাইট যদি আপনি ভালো ভালো কনটেন লেখেন বা আপনার ওয়েবসাইটটি সবার কাছে পরিচিত হয় বা আপনার গুগলে সার্চ ইঞ্জিনে প্রথম থাকে। এবং আপনি যদি ওয়েবসাইটটি দাঁড় করিয়ে ফেলতে পারেন তাহলে একটা সময় খুব আরামের সাথে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ভালো পরিমান টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

আপনাদের জন্য আমি এই পোস্টের শেষ অংশে শেয়ার করেছি, কিভাবে আপনি একটি ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনবেন বা বৃদ্ধি করবেন/কিভাবে আপনার ওয়েবসাইটকে অনলাইনে সবার কাছে জনপ্রিয় করে তুলবেন।

কেননা আপনার সাইটে যদি কোন ভিজিটর না আসে তাহলে অনলাইন থেকে আপনি কোনোভাবেই আপনার ওয়েবসাইট থেকে ভালো পরিমান টাকা ইনকাম করতে পারবেন না। তাই কিভাবে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনবেন তা সব জানতে পারবেন?

বাংলা ওয়েবসাইট থেকে আয়

অনেকেই ভাবেন যে ইংরেজি জানা ছাড়া একটি ওয়েবসাইট চালানো অসম্ভব না এটা ভুল ধারণা এখন বাংলা ওয়েবসাইট বানিয়ে আপনি অনলাইন থেকে ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যেহেতু আমাদের দেশে বেশিরভাগ ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স নির্ভর। কিন্তু এ বিষয়টা একদমই ভুল। কেননা গুগোল এখন বাংলা ভাষায় এডসেন্স দিয়ে থাকে।

ওয়েবসাইটের ইনকাম নির্ভর করে ওয়েবসাইটের ভিজিটর এর উপর। আপনি যদি ভাল পরিমান ভিজিটর বাংলা ওয়েবসাইটে আনতে পারেন তাহলে বাংলা ওয়েবসাইট থেকেও ভালো পরিমাণ ইনকাম করা সম্ভব।

তবে ইংরেজী জানা থাকা ভাল কেননা এতে আপনার শিখা ও জানা সহজ হবে আপনার জন্য। এবং যদি আপনি ইংরেজিতে কোন একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে রেংক করতে পারেন। অর্থাৎ ওয়েবসাইটে ভালো পরিমান ভিজিটর আনতে পারেন তাহলে বাংলা ওয়েবসাইট এর তুলনায় কয়েকগুন বেশি ইনকাম করতে পারবেন।

ওয়েবসাইট কি আপনি জানেন?

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন ওয়েবসাইট কি। আচ্ছা, ওয়েবসাইট কি? সহজ কথায়, একটি ডোমেন নেম(যেমন Dailytk.com এবং ডোমেন এক্সটেনশান (.com,.info,.org, .net ইত্যাদি) এর সমন্বয়ে গঠিত যে ওয়েব এড্রেস তাকেই ওয়েবসাইট বলে।

ওয়েবসাইট বা ওয়েব সাইট অথবা শুধু সাইট হল কোন ওয়েব সার্ভারে রাখা ওয়েব পৃষ্ঠা, ইমেজ, ভিডিও বা অন্যান্য ডিজিটাল তথ্যের সমষ্টিকে বোঝায়, যা ইন্টারনেট বা ল্যানের মাধ্যমে অ্যাক্সেস করা যায়।

একাডেমিক ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয়, অক্সফোর্ড ডিকশনারির সংজ্ঞানুযায়ী, ওয়েবসাইট হল পরস্পর সম্পর্কযুক্ত কয়েকটি ওয়েব পেজ যা একটি ডোমেন নেম এর আওতাভুক্ত, যা সাধারণভাবে একজন ব্যক্তি বা একটি সংস্থার মালিকানায় থাকে এবং তারা এই ওয়েবসাইট প্রকাশ করে।

আপনি যে এখন বাংলাদেশের অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত ওয়েবসাইট Dailytk.com ভিজিট করছেন এটাও একটি ওয়েবসাইট।

ওয়েবসাইট অনেক প্রকারের হয়ে থাকে। আমাদের বহু আলোচিত ফেসবুকের কথায় ধরা যাক। এটি একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট। ইন্সটাগ্রাম, টুইটার এসবই হল সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট এর উদাহরণ।

আবার ইউটিউব, ডেইলি মোশন এগুলো হল ভিডিও শেয়ারিং সাইট। বিভিন্ন ধরণের ওয়েবসাইটের মধ্যে আরও আছে ব্লগিং ওয়েবসাইট, চাকরির ওয়েবসাইট, ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট, ই কমার্স ওয়েবসাইট, শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট ইত্যাদি ।

আপনি বিভিন্ন ধরণের ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায় তা জানতে পারবেন আজকে।

অনেকে মনে করেন একটা ওয়েবসাইট খুলতে হাজার হাজার টাকার প্রয়োজন। কিন্তু না এই ধারণাটা একদমি ভূল। আপনি ইচ্ছা করলে বিনামূল্যে নিজের ওয়েবসাইট খুলতে পারেন। আবার টাকা দিয়েও ওয়েবসাইট খুলতে পারেন। কি আপনার কাছে বিশ্বাস হচ্ছে না বিশ্বাস হবে একটু ধৈর্য সহকারে পড়ুন?

এখন বর্তমানে টাকা দিয়ে ওয়েবসাইট খুললেও তার খরচ হবে খুবই অল্প। আপনি এক বছরের জন্যে $৯.৮৮ দিয়ে একটি ডটকম ডোমেইন নিবেন এবং $১৯.৪৪ দিয়ে হোস্টিং নিয়ে খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। $১৯.৪৪ এটি নেইমচিপ এ সর্বনিম্ন হোস্টিং প্যাকেজ।

অনেক সময় হোস্টিংয়ের মূল্যটি ওঠানামা করে। যখন আপনারা কিনবেন অবশ্যই অনলাইনে চেক দিয়ে তারপরে কিনবেন। তবে আমি যে মূল্যটি আমি উল্লেখ করেছি তার সাথে বেশি একটা ব্যবধান হবে না।

যেহেতু আপনি নতুন একটি ওয়েবসাইট খুলতে যাচ্ছেন সেজন্য অল্প স্পেসের অর্থাৎ অল্প জায়গার হোস্টিং নেওয়ার জন্য আপনাকে আমি পরামর্শ দিলাম। যখন আপনার সাইটে ভিজিটর আসবে এবং আপনার ইনকাম বাড়তে থাকবে তখন আপনি আরও উন্নত এবং ভালো মানের হোস্টিং কিনে নিবেন।

যখন আপনার সাইটে ভিজিটর বেশি আসা ধরবে তখন আপনি এই প্ল্যান টি আপডেট করে, আপনার হোস্টিং স্পেস বাড়াবেন।

godaddy, Namecheap, Bluehost এর মত প্রতিষ্ঠান থেকে আপনি ডোমেইন নেম এবং হোস্টিং নিতে পারেন। যখন আপনি কিনবেন অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে কিনবেন। কাজ করবেন আপনি সেজন্য আপনি ডিসিশন নিবেন কোথা থেকে আপনি হোস্টিং এবং ডোমেইন কিনবেন?

ওয়েবসাইট ডিজাইন করার জন্য আপনি ফ্রি তে অনেকগুলো টেম্পলেট পাবেন যেখান থেকে আপনার পছন্দমত ডিজাইন করতে পারবেন খুব সহজেই।

আপনি চাইলে ফ্রি তে ওয়েবসাইট বানিয়ে আপনি ইনকাম করতে পারবেন কি বিশ্বাস হচ্ছে না হবে। গুগলের একটি ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরীর প্ল্যাটফর্ম রয়েছে blogger.com। এখানে আপনি খুব সহজেই একটি ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করে কাস্টম ডোমেইন নিয়ে ওয়েবসাইট সেটআপ দিতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী ডোমেইন কিনে সেই ওয়েবসাইটে সেটাপ দিতে পারবেন।

আপনি যদি গুগলের এই সার্ভিসটি ব্যবহার করেন তাহলে আপনাকে হোস্টিং নিয়ে চিন্তা করতে হবে না এখানে আপনি আনলিমিটেড হোস্টিং পাবেন যেটি গুগল আপনাকে ফ্রিতে দিবে।

আমি আপনাকে ডোমেইন নেম হোস্টিং প্যাকেজ কিনেই ওয়েবসাইট খোলার পরামর্শ দিব। কেননা একটা ওয়েবাসইট থেকে যেহেতু হাজার হাজার ডলার ইনকাম করা সম্ভব। সেখানে দুই থেকে তিন হাজার টাকা ব্যয় করা আমার মতে বোকামি কোন কাজ নেই। তাই আমাদের মতে, হোস্টিং আপনি ফ্রিতে রাখুন এটা কোন সমস্যা না কিন্তু আপনার একটা ডোমেইন নেম কিনবেন।

আর ফ্রিতে তৈরি ওয়েবসাইটগুলোতে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় এবং ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আর ফ্রি জিনিস যে বেশি ভালো হয় না এটা আমরা সবাই জানি। তাই আপনি যদি পারেন তাহলে আপনি দুই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ করলে আপনি ডোমেইন এবং হোস্টিং পেয়ে যাবেন সেটা আপনার ইচ্ছা?

 ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কত? এবং কি কি লাগে

ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করতে হলে আগে আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য একটা সুন্দর এবং বিষয় এর সাথে মানানসই নাম দিতে হবে আপনাকে। যেমন আপনি অনলাইনে যে নামে সার্চ করেন বা যেমন বাংলাদেশী ওয়েবসাইট কিছু আছে যেমন প্রথম আলো, যুগান্তর, ব্লগার ইংলিশ ইত্যাদি। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে আপনি যে নামে ওয়েবসাইট খুলতে চান সেই নামে কোন ডোমেন এক্সটেনশন এভেইলেবল না। আগে থেকে কেউ ওয়েবসাইট খুলে রেখেছে এই ডোমেন নামে।

তাই প্রথমে আপনাকে যে কাজটি করতে হবে আপনার ওয়েবসাইট কি নামে রাখবেন বা কি নামে রাখলে আপনার ভালো হবে ইত্যাদি বিষয় তাই আপনাকে প্রথমেই ডোমেইন নাম সিলেক্ট করতে হবে?

যেমন, কেউ বিজনেস একটা ওয়েবসাইট খুলতে চাইল নিজের নাম দিয়ে ( ধরা যাক নাম টা কোন ব্যবসায়ী নাম) কিন্তু দেখা গেল এই নামে আগে থেকে ওয়েবসাইট বিদ্যমান। তখন তার জন্য সবচেয়ে ভাল হল আপনি অন্য কোন নাম ব্যবহার করেন যেখানে আপনি .com এক্সটেনশান টা পাবেন।

ডোমেন এক্সটেনশন যে কোন ওয়েবসাইট এর খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস। আপনার ডোমেন এক্সটেনশান দেখে মানুষ বুঝতে পারবে এটা কি ধরণের ওয়েবসাইট। যেমন .edu দিয়ে বুঝায় শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট, .com দিয়ে বুঝায় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট, .org দিয়ে বুঝায় কোন অর্গানাইজেশনের ওয়েবসাইট ইত্যাদি।

এখন আপনি যদি ই-কমার্স ওয়েবসাইট এ .edu ব্যবহার করেন তাহলে বিষয়টি শুধু যে বেমানান হবে তাই না, আপনার ওয়েবসাইট এর নাম দেখে অনেকেই বিভ্রান্ত হবেন।

তাই, ওয়েবসাইট এর জন্য একটা সুন্দর নাম নির্বাচন করা জরুরী এবং তার ডোমেন এক্সটেনশান(.com, .edu, .info) যেন আপনার ওয়েবসাইটের উদ্দেশ্য এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তাও খেয়াল রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

এটা গল্প আকারে বলা যাক।

তৌকির এর টেক রিলেটেড জিনিস যেমন ল্যাপটপ, মোবাইল,ক্যামেরা নিয়ে জানার খুব আগ্রহ। সে প্রায় ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে নতুন ল্যাপটপ, মোবাইল ইত্যাদির নতুন ফিচার কি আসল নতুন মডেলে,পুরাতন মডেল এর সাথে পার্থক্য কি এগুলো নিয়ে লেখা আর্টিস্ট গুলো পড়ে।

একদিন তৌকিরের মনে হল,আচ্ছা আমি যে এই বিষয় নিয়ে জানি,কিন্তু অনেকেই তো জানে না। আমি একটা ব্লগ খুলে তাদের কে ল্যাপটপ এর বিভিন্ন ফিচার সম্পর্কে ধারণা দেই যেন তাদের কিনতে সুবিধা হয়।

যেই ভাবা সেই কাজ। তৌকির একটা নতুন ব্লগ খুলল।বিভিন্ন রকম টেক রিলেটেড প্রোডাক্ট নিয়ে লেখা দিতে থাকল। আর প্রোডাক্ট এর শেষে প্রোডাক্ট টা কোথায় পাওয়া যাবে তার একটা লিংক। সেই লিংকে ক্লিক করে কেউ প্রোডাক্ট কিনলে তৌকির একটা কমিশন পাবে। এটাই হল এফিলিয়েট মার্কেটিং।

ব্যস, তৌকির কে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। তৌকির এর ওয়েবসাইট থেকে প্রোডাক্ট টা সম্পর্কে জেনে ওই প্রোডাক্ট টা তৌকির এর দেওয়া লিংক থেকে ক্লিক করে কেউ কিনলেই তৌকির পায় ৩% এর মত কমিশন। মানে একটা ডিএসএলার ক্যামেরা তৌকির এর দেওয়া লিংক থেকে ৫০০০০ টাকা দিয়ে কিনলে তৌকির বসে বসে পাবে ১৫০০ টাকা।

যতজন যত বার কিনবে তৌকির এই এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে কিনবে তৌকির এই টাকা পেতেই থাকবে। তৌকির এর মত অনেক যুবক মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে শুধু এই এফিলিয়েট মার্কেটিং করে। ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় এফিলিয়েট মার্কেটিং।

আরেকটি সুবিধা হল আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য আপনাকে মোটেও দেশের মানুষের উপর নির্ভর করতে হবে না।

যেমন বর্তমান বিশ্বে আইফোন এর কথাই ধরা যাক। বাংলাদেশে আইফোন এর বিক্রি আমেরিকার তুলনায় নগন্য। কিন্তু আপনি আপনার ওয়েবসাইটে আইফোন নিয়ে লিখলেন এবং আপনার লিংক থেকে কেউ আইফোন কেনার সাথে সাথে কিন্তু আপনি পেয়ে যাবেন আপনার নির্ধারিত কমিশন তা ভিজিটর যেই দেশ থেকেই হোক না কেন।

ওয়েবসাইট খুলে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সাহায্যে সহজেই টাকা আয় করা যায়। এফিলিয়েট মার্কেটিং টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে ।

বাংলাদেশে এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে যারা শুধু এই এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে প্রতিমাসে ৷ কিন্তু এখান থেকে আয় করার আরও কয়েক গুণ বেশি সম্ভাবনা আছে।

অনেকে শুধু বিষয়টি সম্পর্কে যথার্থ ধারণা না থাকায় এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন না। এফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটা জিনিস যেখানে ওয়েবসাইটের পাঠক, ওয়েবসাইটের প্রকাশক এবং পন্য বিক্রেতা এই 3 জনই লাভবান হন।

পাঠক যেমন পন্য টা কেনার আগেই তার সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন পন্যের গুণাগুণ পড়ে, ওয়েবসাইটের প্রকাশক ও তার কমিশন পেয়ে যান আবার বিক্রেতার বিক্রি ও বেড়ে যায়।

তবে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য আপনার কয়েকটা বিষয় খেয়াল রাখা দরকার। যেমনঃ

আপনি যেই পন্যের এফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন সেই পন্যের গুণাগুণ অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করবেন না।

পন্যটির মান যেন ভাল হয় তা অবশ্যই আপনার খেয়াল রাখতে হবে। কারণ,আপনার বর্ণনা পড়ে একজন একটা পন্য কিনল আর তার মান যদি খারাপ হয়, তাহলে সেই ক্রেতা আর আপনার বর্ণনা পড়ে কোন পন্য কিনতে আগ্রহী হবে না পাশাপাশি আপনি একজন ওয়েবসাইট এর ভিজিটর ও হারাবেন। সেই জন্য আপনি এমন কোন লিংক দিবেন যাতে সেই পণ্য ভালো মানের হয়। পরবর্তীতে কোন কাস্টমার আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করে পণ্য ক্রয় করেন?

পন্যের বাস্তব অবস্থা আপনার পাঠকের কাছে বর্ণনা করবেন। পণ্যর কোন গত মান সম্বন্ধে আলোচনা করবেন, যেমন আপনি যদি ক্যামেরার এফিলিয়েট মার্কেটিং করেন আর ক্যামেরাই যদি 4k রেজল্যুশান এর ভিডিও না হয়, তাহকে এটাও আপনার পাঠকের কাছে বর্ণনা করুন। তাহলে পাঠক আপনাকে বিশ্বাস করবে পন্যের গুণাগুণ এর ব্যাপারে। এভাবে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং এ সফলতা পাবেন ইনশা আল্লাহ।

এটা তো গেল শুধু এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কথা।ওয়েবসাইট খুলে তা থেকে এরকম কত উপায়ে যে উপার্জন করা যায় তা নিয়ে লিখতে গেলে একটা রিসার্চ পেপার লেখা লাগবে।ওয়েবসাইট খুলে আজ অবারিত সুযোগ অর্থ উপার্জন এর।

ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দিয়ে ইনকাম

ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দিয়ে আপনি আয় করতে পারবেন প্রচুর অর্থ বা টাকা। যেমন ধরুন আপনি আপনার ওয়েবসাইট এ বাচ্চাদের পোশাক বিক্রি করেন। এখন আপনার ওয়েবসাইটে কেউ বাচ্চাদের খেলনা বিক্রি করার জন্য বিজ্ঞাপন দিল। এর ফলে আপনি যেমন নগদ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন পাশাপাশি বিজ্ঞাপন দাতাও তার বিক্রি বাড়াতে পারবেন।

তবে এক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন টি সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট এর প্রোডাক্ট এর সাথে যেন মিলে না যায় তা খেয়াল রাখতে হবে। যেমন আপনি যদি থ্রি পিস বিক্রেতা হন তাহলে আপনার ওয়েবসাইটে আরেকজন যে আপনার মত থ্রি পিস বিক্রি করে তার বিজ্ঞাপন অবশ্যই দিবেন না। এতে করে আপনার থ্রি পিস এর কাস্টোমার তার কাছে চলে যাবে ফলে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন এর বিষয়ে বাংলাদেশে খুব কমন একটা অভিযোগ হল অনেকেই ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেবার জন্য ক্লায়েন্ট নাকি খুজে পাওয়া যায় না।

এক্ষেত্রে আপনি যেই কাজটা করতে পারেন তা হল আপনার ওয়েবসাইট এ বিজ্ঞাপন দেবার জন্য কিছু জায়গা আলাদা করে রাখবেন। তারপর হোমপেজ এ ওই জায়গাটিতে লিখবেন যে “বিজ্ঞাপন এর জন্য বরাদ্দকৃত জায়গা,বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন (মোবাইল নাম্বার) ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদি মাধ্যম

হোমপেজ এ হলে ভাল হয় তাহলে সবাই দেখতে পাবে লেখাটি। আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিটর যদি প্রতিদিন 3k হয় তাহলে প্রতিদিন 3k মানুষ লেখাটি দেখতে পাবে এবং তাদের মধ্যে থেকেই আপনি বিজ্ঞাপন দাতা খুজে পাবেন ইনশা আল্লাহ।

গুগল এডসেন্স দ্বারা ওয়েবসাইট থেকে আয়

আপনার মনে হল যে ওয়েবসাইট এ বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য ক্লায়েন্ট জোগাড় করা বেশ ঝামেলার ব্যাপার। এটার পিছনে সময় ব্যয় করতে আপনি চান না। তাহলে আপনি গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে পারবেন। যদিও ২০২১ সালে গুগল এডসেন্স এর নিয়মাবলি একটু কঠিন। তবে সঠিক নিয়মে কাজ করলে কোন কঠিন কিছু না।

কিভাবে গুগল এডসেন্স এ কানেক্ট করবেন আপনার ওয়েবসাইট এটা নিয়ে আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে। কাজটা খুবই সহজ। তবে কিছু ভিজিটর গুগল থেকে আসা শুরু করলে গুগল এডস্নেস এ আবেদন করা উচিত।

একটি গুগল একাউন্ট দিয়ে গুগোল অ্যাডসেন্সে সাইন আপ করে সঠিক তথ্য দিয়ে গুগল এডস্নেস একাউন্ট তৈরি করলেই হবে।

আপনার ফোন নাম্বার ও আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা গুগল এডস্নেসে সাইন আপ করার সময় দিতেহবে । আপনার ঐ ঠিকানায় গুগোল চিঠি পাঠিয়ে আপনার ঠিকানা ভেরিফাই করবে। আপনার অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই করা ছাড়া আপনি কোন টাকা ওই অ্যাকাউন্ট থেকে উত্তোলন করতে পারবেন না।

আপনার গুগল এডসেন্স একাউন্টে যখন 10 ডলার হবে তখন আপনার এলাকায় চিঠি পাঠিয়ে দিবে গুগল।

ওই চিঠিতে দেওয়া পিন কোড দিয়ে আপনার এডসেন্স একাউন্ট ভেরিফাই করতে হবে।

এডসেন্স এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর যত বাড়বে আপনার এডসেন্স থেকে ইনকাম তত বাড়বে।

যেমন আপনি যদি ব্যবসা ও শিল্প বিষয়ক কোন ওয়েবসাইট খুলেন আর তাতে যদি 60k ভিজিটর থাকে প্রতিমাসে, তাহলে শুধু গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে আপনি আয় করতে পারবেন কমপহ্মে মাসে ৪০- ৫০ হাজার টাকা? তার থেকেও বেশিও হতে পারে। আর ভিজিটর বাড়ার সাথে সাথে এডসেন্স থেকে আপনার আয় বৃদ্ধি পেতেই থাকবে

গুগল এডসেন্স এর কিছু অনন্য সুবিধাঃ

আপনাকে আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য বিজ্ঞাপনদাতা খুজতে হবে না।আপনার হয়ে গুগল এডসেন্স এই কাজটি করে দিবে।

আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য কোন বিজ্ঞাপন পছন্দ না হলে তা রিমুভ করতে পারবেন।

গুগলে এডসেন্স এ খুব সহজেই যুক্ত হওয়া যায়। বলা যায় যে,গুগল এডসেন্স এ যুক্ত হবার সাথে সাথেই আপনার ওয়েবসাইট টাকা আয় করার ওয়েবসাইট এ পরিণত হবে ইনশা আল্লাহ।

 ই কমার্স ওয়েবসাইট থেকে আয়

সোনিয়া একজন গৃহিনী। সে খুব ভাল পিঠা তৈরি করতে পারে। একদিন তার এক বান্ধবী বুদ্ধি দিল যে তানিয়া তো চাইলেই ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে তার পিঠা বিক্রি করতে পারে। তানিয়া ওয়েবসাইট খুলে তার পিঠা বিক্রি শুরু করল। এখন সোনিয়া প্রতি মাসে পিঠা বিক্রি করেই শুধু ৩০০০০ এর বেশি টাকা উপার্জন করে।

ই কমার্স ওয়েবসাইট এর জয়জয়কার বর্তমান বিশ্বে। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি জেফ বেজোস ই কমার্স ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এমাজন এর মালিক। চায়নার আরেক ধনকুবের জ্যাক মা ই কমার্স ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আলিবাবা র মালিক।

ই কমার্স ওয়েবসাইট আপনি প্রধানত দুইভাবে করতে পারেন। এক ভাবে হল সেখানে শুধু আপনি পন্য বিক্র‍য় করবেন। অর্থাৎ বিক্রেতা শুধু আপনি আর ক্রেতা বাকি সবাই।আরেক ভাবে করা যায় তা হল আপনি এমন একটা প্ল্যাটফর্ম বানাবেন যেখানে সবাই এসে পন্য বিক্রি করতে পারবে এমাজন এর মত। তবে এই পদ্ধতিতে প্রচুর বিনিয়োগ করা লাগবে।

ই কমার্স ওয়েবসাইট এর জন্য আপনাকে ওয়েবসাইট এর ডিজাইন এর দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। আপনি যমুনা ফিউচার পার্ক, আগুরা ইত্যাদি সুপার শপ এ ঢুকলে দেখেন যে সেখানে পন্য গুলো খুব সুন্দর ভাবে সাজানো। মাছ এর জন্য আলাদা সেকশন, ফাস্ট ফুড এর জন্য আলাদা সেকশন। আপনি যখন আপনার ই কমার্স সাইট ডিজাইন করবেন তখন আপনাকে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আপনার ই কমার্স সাইটটি কে অনলাইন সুপারশপ বলা যায়।

এখানে গ্রাহক যাতে সহজেই তার পছন্দসই জিনিসটা পেয়ে যায় সেদিকে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে।

প্রোডাক্ট সেল করার আদর্শ জায়গা ওয়েবসাইট। কিন্তু ফেসবুকেও তো প্রোডাক্ট সেল করা যায়,তাহলে ওয়েবসাইটে খুলে প্রোডাক্ট সেল করার কি দরকার আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে।

ফেসবুকে প্রোডাক্ট সেল করার সুবিধা থাকলেও একটা ওয়েবসাইট আপনাকে তার থেকে কয়েকগুণ বেশি সুযোগ সুবিধা দিবে প্রোডাক্ট সেল করার ক্ষেত্রে।

যেমন, মনে করেন আপনি খাঁটি নারিকেল তেল বিক্রি করবেন। আপনি এখন আপনার ওয়েবসাইটে খাঁটি নারিকেল তেলর উপকারিতা কি এবং কেন আমাদের খাঁটি নারিকেল তেল ব্যবহার করা উচিত সরিষার তেল এর বদলে সম্পর্কিত একটা লেখা দিলেন।

এখন গুগল এ কেউ খাঁটি নারিকেল তেলর উপকারিতা নিয়ে লেখা সার্চ দিলেই আপনার ওয়েবসাইট টি চলে আসবে এবং আপনার লেখা ওয়েবসাইট থেকে পড়ে অনেকেই আপনার পন্য কিনতে আগ্রহী হবে।কিন্তু ফেসবুকে আপনি এই ধরনের লেখা লিখলেও সার্চ ইঞ্জিন এ আপনার লেখা পাবার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে।

ওয়েবসাইট খুলে প্রোডাক্ট বিক্রি করার আরও কয়েকটা সুবিধা আছে যেমন:

ওয়েবসাইট টা কে নিজের রুচি অনুযায়ী ডিজাইন করা যায় যা আপনি সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে পারবেন না।

অনেকগুলো প্রোডাক্ট একসাথে প্রদর্শন এর ব্যবস্থা করা যাবে।

প্রোডাক্ট এর বর্তমান অবস্থান নিয়মিত আপডেট করা যাবে।যেমন ধরুন আপনি যদি ছেলেদের পোশাক বিক্রি করেন আর কোন পোশাক যদি বিক্রি হয়ে যায় তাহলে আপনি সোল্ড আউট লিখে আপডেট করতে পারবেন।

কাস্টোমার এর ভার্চুয়াল ঠিকানা যেমন ইমেইল পাওয়া যায় যার ফলে নতুন কোন প্রোডাক্ট আসলে আপনি আপনার পুরাতন কাস্টোমার দের কে খুব সহজেই অবহিত কর‍তে পারবেন।

নিউজ পোর্টাল থেকে আয়

একটি ভাল মানের নিউজ পোর্টাল এর চাহিদা অনেক। আপনি চাইলেই অনলাইনে নিউজ পোর্টাল এর একটি ওয়েবসাইট খুলতে পারেন এবং আপনার কোন প্রিন্ট সংস্করণ থাকা জরুরী নয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল এর জন্য। বাংলাদেশে অনেক নিউজ পোর্টাল আছে যাদের প্রিন্ট সংস্করণ না থাকলেও শুধু অনলাইন সংস্করণ বের করেই তারা দারুণ জনপ্রিয়।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল হতে পারে দৈনিক বা সাপ্তাহিক। লেখার মান ভাল হতে হবে এবং কারেন্ট নিউজ এর ব্যাপারে দ্রুত লেখা দিতে হবে। অনলাইন নিউজ পোর্টাল এর আয়ের প্রধান মাধ্যম ওয়েবসাইটে দেওয়া সরাসরি বিজ্ঞাপন। তাই আপনার নিউজ পোর্টাল এর ভিজিটর যত বেশি হবে বিজ্ঞাপন তত বেশি পাওয়া যাবে।

আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে প্লেজিয়ারিজম একদমই করা যাবে না। প্লেজিয়ারিজম করলে পাঠক আগ্রহ হারাবে অনলাইন পত্রিকার উপর। একান্ত বাধ্য হয়ে যদি কোন সংবাদ প্রতিনিধি না পাওয়া যায় ওই এলাকায় বা স্থানে, তাহলে অবশ্যই যে পত্রিকা থেকে খবর নেওয়া হয়েছে তা সূত্র হিসেবে উল্লেখ করে দিতে হবে।

সাবস্ক্রিপশন ফি

সাবস্ক্রিপশন ফি বা মেমবারশিপ ফি বা প্রিমিয়াম মেমবারশিপ সহ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে এর পরিচিতি।

এই ধরণের ওয়েবসাইট তার বিভিন্ন লেখা গুলো পাঠক দের কে পড়তে দেওয়ার জন্য পাঠকের কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট এমাউন্ট এর টাকা নেয়। তারপর একাউন্ট খুলে ওই ওয়েবসাইটে লগ ইন করলেই কেবল পাঠক তাদের লেখা গুলো পড়তে পারবে।

এটা দুইভাবে হতে পারে। একরকম ভাবে হয় যে ওয়েবসাইট এর যে কোন কন্টেন্ট পাঠক নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি ছাড়া পড়তেই পারবে না। আবার আরেকভাবে হতে পারে যে ওয়েবসাইটের কিছু লেখা সবার জন্য উন্মুক্ত কিন্তু কিছু লেখা পড়ার জন্য আপনাকে সাবস্ক্রিপশন ফি প্রদান করতে হয়।

বাংলাদেশে এই ধরণের ওয়েবসাইট যা সাবস্ক্রিপশন ফি এর মাধ্যমে চলে খুবই অল্প। কিন্তু বিশ্বের বিখ্যাত পত্রিকা যেমন লন্ডনের দ্য টেলিগ্রাফ আবার অনেক বিখ্যাত বিখ্যাত ম্যাগাজিন সাবস্ক্রিপশন ফি কে তাদের আয়ের একটি প্রধান উৎসে পরিণত করেছে।

ডোনেশন

বাংলাদেশে পুরোপুরি ডোনেশন এর উপর চলে এমন ওয়েবসাইট এর সংখ্যা খুব অল্প। তারা যে ডোনেশন এর উপর নির্ভর করে চলতে পারছে এটার থেকে প্রমাণ হয় যে ডোনেশন ভিত্তিক ওয়েবসাইট বাংলাদেশে সহজেই চলতে পারে।

ডোনেশন ভিত্তিক ওয়েবসাইট বানানোর ক্ষেত্রে আপনাকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে:

ওয়েবসাইট এর কন্টেন্ট গুলোর কোয়ালিটি খুব ভাল হতে হবে।

বিশেষ একটা শ্রেণী কে টার্গেট করে ওয়েবসাইট লিখলে খুব ভাল হয়। যেমন বিশ্বব্যাপী অসংখ্য ধর্মীয় ওয়েবসাইট পুরোপুরি ডোনেশন এর উপর চলে।

ডোনেশন যেন সবাই সহজে দিতে পারে সেই ব্যবস্থা রাখতে হবে। যেমন বাংলাদেশে ওয়েবসাইটে আপনি ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার রাখার পাশাপাশি অবশ্যই একটা বিকাশ নাম্বার ও রাখবেন। ব্যাংক এ চেয়ে টাকা জমা দেওয়া বেশ ঝামেলার কাজ। কিন্তু বিকাশ একাউন্ট এর সাহায্যে খুব সহজেই ডোনেশন দেওয়া যাবে।

আপনার ডোনেশন এর অর্থ কেন প্রয়োজন এবং তা কি কাজে ব্যবহার করা হবে তা উল্লেখ করলে ভাল হয়।

স্পনসরশিপ

স্পনসরশিপ এর মাধ্যমে টাকা পাবার উপায় হল আপনার ওয়েবসাইটে যে কন্টেন্ট নিয়ে সাজাবেন সেই কন্টেন্ট গুলোর সবকয়টি অথবা সুনির্দিষ্ট কিছু কন্টেন্ট এর জন্য আপনি কারও কাছে থেকে অর্থ নিবেন এবং তার বিনিময়ে আপনি ওয়েবসাইটের পুরোটা বা সুনির্দিষ্ট কিছু কন্টেন্টে তার অথবা তার প্রতিষ্ঠান এর নাম উল্লেখ করে দিবেন। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন বিষয়টা?

বাংলাদেশে স্পনসরদের কাছে থেকে কোন ওয়েবসাইট এর আয় করার অনেক উদাহরণ আছে। যেমনঃ রবি 10 মিনিট স্কুল এর কথা তো আপনারা অবশ্যই শুনেছেন। 10 মিনিট স্কুল কে পুরোপুরি স্পনসর করে রবি এবং তাই রবি র নাম তাদের প্রতিষ্ঠান এর নামের আগে তারা যুক্ত করেছে।

স্পনসরশিপ সাধারণত বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান, মোবাইল কোম্পানি দিয়ে থাকে। স্পনশরসরশিপ দেবার মাধ্যমে তাদের পন্যের যেমন প্রচার হয় পাশাপাশি ওয়েবসাইট এর আয় এর বাড়তি আরেকটি খাত ও যুক্ত হয় ওয়েবসাইট এর মালিকের জন্য।

সার্ভিস বিক্রি

সার্ভিস বিক্রি হল আপনি যেই বিষয়ে দক্ষ আপনার ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে আপনি তাতে টাকার বিনিময়ে অন্যদের কে প্রশিক্ষণ দিবেন।

ধরা যাক, আপনি ওয়েব ও গ্রাফিক্স ডিজাইন এ সুদক্ষ। তখন আপনি আপনার ওয়েবসাইট থেকে আপনার ছাত্রদের জন্য বিভিন্ন কোর্স দিতে পারেন।

ওয়েবসাইট থেকে এই ধরণের কোর্স করানোর সুবিধা হল যে আপনি আপনার কন্টেন্ট গুলো যারা টাকা দিবে শুধু তারাই যেন দেখতে পাই সেই ব্যবস্থা করতে পারবেন।

ওয়েবসাইটের গ্রাহকদের ইমেইল বিক্রয় করে আয়

আপনারা কোন ওয়েবসাইট এ ঢুকে কমেন্ট করতে চাইলে দেখবেন যে আপনার ইমেইল এড্রেস টা তারা নূন্যতম পক্ষে চাই। আপনার ওয়েবসাইট এ যদি এরকম হাজার হাজার ভিজিটর থাকে তবে আপনি আপনার গ্রাহকদের ইমেইল এড্রেস সরবরাহ করেও আয় করতে পারেন।

ইমেইল এড্রেস বিক্রি করা একটি খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। গুগল, ফেসবুক এরাও করে। তবে, ওয়েবসাইট এর ভিজিটর এর মোবাইল নাম্বার যদি আপনার কাছে থাকে তবে আপনার তা বিক্রি করা উচিত হবে না।

কারণ ইমেইল যেমন ওয়েবসাইট এর ভিজিটর এর খোলা বা না খোলার স্বাধীনতা আছে, মোবাইল নাম্বার এ বিষয়টি তেমন না। মোবাইল নাম্বার শেয়ার করা উচিত না এমন ডাটার অন্তর্ভুক্ত ধরা হয়।

আপনি যদি গুগলে সার্চ করেন তাহলে অনেক ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন যারা ইমেইল এড্রেস ক্রয় করে। আপনি ইচ্ছা করলে আপনার ওয়েবসাইট হতে সংগ্রহকৃত ইমেইল এড্রেস গুলি সেই ওয়েবসাইট গুলিতে বিক্রি করে ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

২০১৩ সাল। ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম কে কিনে নেবার সিদ্ধান্ত নিল। ইন্সটাগ্রাম ওয়েবসাইট এর দর বলল ১ বিলিয়ন ডলার। দাম টা অনেকের কাছেই অনেক অনেক বেশি মনে হল। কিন্তু ফেসবুক এর কাছে না। ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম কিনে ফেলল। আর তারপর? বাকিটা শুধুই ইতিহাস।

ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে অনুসারে,২০১৮ সালে এড রেভিনিউ থেকে ইন্সটাগ্রাম আয় করেছে ৩০ বিলিয়ন ডলার? আবার মনে করিয়ে দেই ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম কিনেছিল ১ বিলিয়ন ডলার দিয়ে। তার মানে শুধু ২০১৮ সালেই ইন্সটাগ্রাম কেনার থেকে ৩০ গুণ অর্থ লাভ করেছে ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম এর এড থেকেই?

আপনার ওয়েবসাইট হল আপনার সোনার হরিণ। এই সোনার হরিণ বিক্রি করার পরামর্শ আমরা মোটেও দিব না। কিন্তু হঠাৎ কোন কারণে আপনার অনেক টাকার প্রয়োজন হল। তখন আপনি আপনার ওয়েবসাইট টি কে বিক্রি র সিদ্ধান্ত নিলেন।

ওয়েবসাইট বিক্রি করে আপনি অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন এবং ওয়েবসাইট বিক্রি ও করা যাবে খুব সহজেই। আপনার ওয়েবসাইট এর মাসিক আয় যদি ২০০০০ টাকা হয়,তাহলে আপনি ৪০ গুণ পর্যন্ত দামে অর্থাৎ ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দামে আপনার ওয়েবসাইট টি বিক্রি করতে পারেন।

অনলাইনে ওয়েবসাইট বিক্রির অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে। সেখানে আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দিলেই পেয়ে যাবেন আপনার ওয়েবসাইটের ক্রেতা। তাদের কাছে আপনি খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইটটি সঠিক মূল্যে বিক্রি করতে পারবেন।

আপনার একটা ওয়েবসাইট মানে আপনার সুনির্দিষ্ট একটি অনলাইন ভার্চুয়াল ঠিকানা।

অনেক সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ আবেদন করার সময় সিভি তে স্বল্প কথায় সমস্ত যোগ্যতা আবেদনকারীর বুঝানো সম্ভব হয় না। আবার সিভি তে অল্প জায়গায় যেহেতু লিখতে হয় তাই সেখানে অনেক কিছুই বাদ পড়ে যায়। এক্ষেত্রে কার্যকর একটা উপায় হল যে আপনার সিভি তে আপনার ওয়েবসাইট এর উল্লেখ করা।

আপনি যেই প্রতিষ্ঠান এ আবেদন করেন না কেন, তারা আপনার সমস্ত জীবনবৃত্তান্ত আপনার ওয়েবসাইট এ পাবে।

অন্যান্য চাকরি প্রার্থী দের থেকে আপনি এগিয়ে থাকবেন বিস্তর ব্যবধানে এই ওয়েবসাইট এর জন্য যাকে আপনি পোর্টফোলিও হিসেবে ব্যবহার করবেন।

আপনি ওয়েবসাইট কে পোর্টফোলিও হিসেবে ব্যবহার করলে আপনার ওয়েবসাইট টিতে যে সব কন্টেন্ট রাখা উচিতঃ

উদাহরণ জীবনের ছোট একটা বর্ণনা।

আপনার কর্মক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা এবং আপনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ কিভাবে অবদান রেখেছেন।

আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র।

আপনার কর্মক্ষেত্রগুলোর একটি ছবির ফাইল।

আসল কথাটা হচ্ছে যে, আপনি আপনার পোর্টফোলিও ওয়েবসাইটকে ব্যবহার করে অনলাইন হতে অনেক কাজ সংগ্রহ করতে পারবেন, আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী।

আরো পড়ুন..

তবে এক্ষেত্রে আপনাকে ওয়েবসাইট টি র ডিজাইন এর দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

উপরের ওয়েবসাইট থেকে আয় করার সহজ উপায় এর উপর দীর্ঘ আলোচনা থেকে তো নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন যে ওয়েবসাইট এর আয়ের অনেকাংশেই নির্ভর করে ভিজিটর এর উপর। তাই ভিজিটর বাড়ানোর কিছু টিপস আমি এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করব

সোশ্যাল মিডিয়া যেমন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার ইত্যাদি মাধ্যমে শেয়ার করুন আপনার ওয়েবসাইট এর লেখা। আপনার সোশ্যাল মিডিয়া তে শেয়ারের ফলে পরিচিত অপরিচিত অনেক মানুষ আপনার ওয়েবসাইট এর কন্টেন্ট টা দেখবে এবং আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিটর বাড়বে।

ই কমার্স রিলেটেড ওয়েবসাইট এর জন্য ইন্সটাগ্রাম এ প্রচার খুবই কার্যকরী। যেহেতু, ইন্সটাগ্রাম ছবি আপলোড এর জন্য বিশেষভাবে ব্যবহার হয়, তাই আপনি আপনার প্রোডাক্ট এর ছবি তুলে প্রচারের জন্য অবশ্যই ইন্সটাগ্রাম এ শেয়ার করবেন।

কন্টেন্ট এর মান বৃদ্ধি করুন। ভাল মানের কন্টেন্ট ভিজিটর কে অনেকক্ষণ ধরে রাখবে আপনার ওয়েবসাইটে যা আপনার ওয়েবসাইট এর অন্যান্য লেখা পড়তেও তাকে উৎসাহ যোগাবে।

পাঠকদের কে তাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে যদিও বা তারা সমালোচনা করে। এতে আপনি আপনার কন্টেন্ট কে আরও উন্নত করতে পারবেন।

নতুন কোন কন্টেন্ট আসার সাথে সাথে আপনি আপনার ভিজিটর দের মেইলে সেই লেখার লিংক পাঠিয়ে দিন যেন তারা জানতে পারে নতুন লেখা এসেছে। এমন অনেক ফ্রি টুলস আছে যার সাহায্যে আপনি আপনার ইমেইল লিস্ট এর সবাইকে একবারে মেইল করতে পারবেন।

বড়, দীর্ঘ লেখাগুলো অনেক সময়ই বিরক্তিকর হয়ে যায়। পারলে লেখাগুলোর মাঝে কিছু কিছু ছোট ছোট গল্প যুক্ত করুন।

আমাদের শেষ কথা,

সুতরাং বলা যায়,ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন একটি খুবই লাভবান অনলাইন ব্যবসা। ওয়েবসাইটের সবচেয়ে ভাল দিক হল খুব অল্প টাকা বিনিয়োগ করলেই আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

বর্তমানে ওয়েবসাইট খোলার আরেকটি সুবিধা হল এখানে ঝামেলা তুলনামূলক ভাবে খুব কম। আপনি যদি একটা ছোট খাটো দোকান দিতে যান তাহলে আপনাকে লাইসেন্স করা লাগবে, দোকান ভাড়া দিতে হবে প্রতিমাসে, একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখা লাগবে দোকান মালিকের কাছে। আর ওয়েবসাইট খুলতে আপনাকে এসব ঝামেলা র কিছুই করা লাগবে না এবং আপনার টাকাও সাশ্রয় হবে অনেক।

আর আপনি ওয়েবসাইট থেকে আয় করার জন্য কোন পদ্ধতি ব্যবহার করতে চান তা জানান কমেন্ট বক্সে। লেখাটি ভাল লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। তাই আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন। কারন আপনার একটা শেয়ারি পারে একটা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে?

1 thought on “২০২৩ সালে ওয়েবসাইট থেকে আয় করার সহজ উপায়”

Leave a Comment