এখন বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত একটি সার্চ ইঞ্জিন হলো গুগল। প্রায় প্রতিদিন 5.6 billion বার সার্চ হয় গুগলে। এবং এই সার্চ থেকে গুগল ৫০০ মিলিয়নের ডলারেও বেশি আয় করে প্রতি মাসে। কিন্তু এখন আমাদের প্রশ্ন হলো কিভাবে গুগল থেকে আয় করব।
আজকের এই পোস্টে গুগল থেকে আয় সম্পর্কিত বিস্তারিত সকল বিষয় শেয়ার করা হবে আপনাদের সাথে। আপনারা এই পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়ে নিবেন কারন এই পোস্ট এর মাধ্যমে আপনারা গুগল থেকে কি কিভাবে ইনকাম করা যায় তা জানতে পারবেন?
বর্তমানে আমরা এখন গুগল থেকে আয়কে আমরা প্রধানত ২ ভাগে ভাগ করতে পারি। যেমনঃ-
চলুন এবার জেনে নিই এর সম্পর্কে বিস্তারিত।
টপিক সূচিঃ
গুগল থেকে আয় করার সহজ উপায় সমূহ
সরাসরি গুগল থেকে আয় বলতে বুঝিয়েছি এমন একটি আয়ের মাধ্যম যেটিতে গুগল সরাসরি আমাদের টাকা দিবে। সরাসরি গুগল থেকে আয় করার একমাত্র উপায় হলো গুগল এডস।
গুগল তাদের এডস আমাদের ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল, এপস এ বসিয়ে প্রতি ইমপ্রেশন বা ভিসিটরের জন্য আমাদের একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ দিয়ে থাকে এটিই মূলত সরাসরি Google থেকে টাকা আয় করার একমাত্র উপায়।
অবশ্যই পড়ুন:
- টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার উপায়
- ইউটিউব থেকে অনলাইনে আয় করতে গেলে যেগুলো বিষয় জানা প্রয়োজন
- অনলাইন জব ২০২৪: ঘরে বসে ১৩টি সেরা জব করুন
গুগলের যেই অঙ্গ সংস্থানটি ওয়েবসাইট এবং ইউটিউবকে এডস প্রোভাইড করে থাকে সেটিই হলো এডসেন্স। এই এডসেন্স ব্যবহার করে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আয় করারও দৃষ্টান্ত আছে। আপনি চাইলেই আপনার ইউটিউব বা ওয়েবসাইটকে মনিটাইজ করতে পারেন গুগল এডসেন্স দ্বারা।
ইউটিউবও গুগলের একটি অঙ্গ সংগঠন। একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে তার মধ্যে এডসেন্সের এডস বসিয়ে আপনি ভালো টাকা আয় করতে পারবেন।কিন্তু এর জন্য কিছু শর্ত মানতে হবে আপনাকে। শর্তগুলো নিম্নরূপঃ-
- ১০০০ সাবসক্রাইবার থাকতে হবে।
- ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম থাকতে হবে।
- ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত থাকতে হবে।
উপরোক্ত শর্ত গুলো সঠিক ভাবে মেনে চললে আপনি সহজেই আপনার ইউটিউব চ্যানেলকে এডসেন্স দ্বারা মনিটাইজ করতে পারবেন।এছাড়াও একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে আপনি নানা ভাবে আয় করতে পারবেন। তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে এই পোস্টটি পড়ুন।
বর্তমানে এখন আমরা ওয়েবসাইট বিষয়টির সাথে সকলেই প্রায় পরিচিত। আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নানা সমস্যার জন্য গুগলে কিংবা অন্য কোন সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করি তখন কোন না কোন ওয়েবসাইট আমাদের সমস্যার সমাধান আমাদের দেয় এবং আমরা ঐ ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করার জন্য ওয়েবসাইট এডমিন একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ আমাদের এড দেখা বা এডে ক্লিক দেওয়ার জন্য, যদি তার ওয়েবসাইট এডসেন্স দ্বারা মনিটাইজ করা থাকে।
একটি ওয়েবসাইট এডসেন্সের এপ্রুভাল পাওয়ার জন্য নিচের শর্ত গুলো অবশ্যই মানতে হবে।
- Privacy policy, contact with us, about us এই তিনটি পেইজ ক্রিয়েট করতে হবে।
- আর্টিকেল ইউনিক হতে হবে।
- গুগল সার্চ কনসোলে ইনডেক্স থাকতে হবে।
উপরোক্ত সকল শর্ত মানলে আপনার ওয়েবসাইট এডসেন্সের এপ্রুভাল পাবে এবং আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইটকে নানা ভাবে মনিটাইজ করে আয় করতে পারেন এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই পোস্টটি পড়ুন।
আর দেখুন:
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক কাজকে সহজথেকে সহজতর করে তুলেছে মোবাইল এপ।আমাদের প্রত্যকের মোবাইলেই কম বেশি এপ/গেমস রয়েছে। আমরা এসব এপ/গেমস ব্যবহার করার সময় অনেকেই হয়ত দেখি হঠাৎ কোন একটি বিজ্ঞাপন আমাদের সামনে চলে এসেছে এটিই হলো এডস।
গুগল ছাড়াও অনেক কোম্পানি এডস দিয়ে থাকে। গুগলের যেই অঙ্গ সংগঠনটি এপস বা গেমসের জন্য এডস প্রোভাইড করে সেটিই হলো এডমুভ আমনার এপসে যদি ভালো কন্টেন্ট থাকে এবং এপসটি যদি গুগল প্লে স্টোরে আপলোড থাকে তাহলেই আপনি আপনার এপ এর মধ্যে এডমুভ এর এডস বসাতে পারবেন।
সাধারণত এডসেন্স এর মতো তেমন কোন শর্ত এডমুভে নেই। যে কেউ চাইলেই সহজে এডমুভের এডস এপের মধ্যে বসাতে পারে। কিন্তু এপটিকে অবশ্যই প্লে স্টোরে আপলোড থাকতে হবে।
গুগল এডমোভ বা এডসেন্স ইনভেলিড ক্লিকের ব্যাপারে খুবই সর্তক তাই কখনো ইনভেলিড ক্লিক করার চেষ্টা করবেন না।
উপরোক্ত দুটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আপনি সরাসরি গুগল থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। এবং এসব প্ল্যাটফর্মে আপনাকে সরাসরি আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠাবেন।
কেন এসব এড এর জন্য গুগল আপনাকে টাকা দিবে?
অনেক আগে বিজ্ঞাপন মানে আপরা বুঝতাম টিভিতে এড দেওয়া না হয় ব্যানার,বিলবোর্ডনছাপিয়ে বড় বগ তা লাগানো কিন্তু প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে এখন চলে এসেছে ডিজিটাল মার্কেটিং।
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মেইন কনসেপ্ট হলো সকল বিজ্ঞাপন, প্রচারকার্য হবে অনলাইনে যেমনঃ- ইউটিউব ফেইসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে।
তাই বিভিন্ন বড় বড় কোম্পনি তাদের ব্যনার এড বা ভিডিও এড ইউটিউব/ওয়েবসাইটে দেখানোর জন্য গুগলকে টাকা দেয় গুগল সেই এডস গুলো আমাদের ইউটিউব ভিডিও এবং ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করিয়ে আয়কৃত অর্থের ৫০% আমাদের দেয় ৫০% গুগল নেই।
এভাবেই গুগল নিজে আয় করে এবং আমাদের টাকা দেয়। আসা করি বুঝতে পেরেছেন।না বুঝলে কমেন্টে জানাবেন।
আরও দেখতে পারেন:
এতক্ষণ যেই প্রোসেস এর কথা বলেছি তাতে গুগল নিজেই আমাদের অর্থ দিবে কিংবা আমাদের অর্থ দেওয়ার দ্বায়িত্ব গুগলই নিবে।
কিন্তু এবার যেই প্রোসেসটি দেখাব সেটিতে আমরা আয় করব অন্য কোন কোম্পানি বা প্ল্যাটফর্ম থেকে কিন্তু আয়টা করব গুগলকেই ব্যবহার করে। যেমনঃ-
ই- কর্মাস ওয়েবসাইট দ্বারা গুগল থেকে আয়
এই এক-বিংশ শতাব্দীতে এসে বাজারে গিয়ে কোন জিনিস পত্র কিনে আনার ব্যপারে বিপ্লব ঘটেছে, মানুষ এখন যেকোন বাজার করতে পারছে অনলাইনেই এবং বিক্রেতারাও তাদের নানা জিনিস সহজে বিক্রি করতে পারছে সহজেই অনলাইনে একটি মাত্র ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।
আর যে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ক্রেতা এবং বিক্রেতার সংযোগ সাধন হয় সেটিই হলোই-কমার্স ওয়েবসাইট। যদিও ২০২১ সালে সকল পণ্য কেনা বেচা এখনও অনলাইন ভিত্তিক হয়নি কিন্তু খুব তাড়াতাড়িই এটি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আপনি যদি কোন ব্যবসা অনলাইনে দাড় করাতে চান তাহলে সহজেই কোন একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট খুলে সেটির মধ্যে নিজের পণ্যের ডিটেইলস দিয়ে তা বিক্রি করতে পারেন।
একটি উদাহরণ দেওয়া যাকঃ- একজন ক্রেতার ভালো মানের টি-শার্ট লাগবে।সে গুগলে গিয়ে “best t-shirt in Bangladesh ” লিখে সার্চ করবে। তখন একজন টি-শার্ট বিক্রেতার ই-কমার্স সাইট ক্রেতা দেখতে পারবেন এবং সেই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সে টি-শার্ট কিনবে।
এটিই হলো ই-কমার্সের নিয়ম। এখানে আমরা গুগলকে ব্যবহার করেছি কিন্তু আয় টা করেছি নিজেই
বর্তমানে আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যমটি হলো এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। ই-কমার্স বিজনেস এর ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি যে পণ্য বিক্রি করবেন সেই পণ্যটি আপনার কাছে মজুত থাকতে হবে।
যেমন যদি আপনি টি-শার্ট এর ব্যবসা করেন তাহলে আপনার কাজে বিক্রি করার মতো টি-শার্ট থাকতে হবে। কিন্তু এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটি বিষয় যেখানে আপনার নিজের কোন নির্দিষ্ট পণ্য থাকা লাগবে না আপনি অন্যের পণ্য বিক্রি করে তার থেকে কিছু টাকা কমিশন নিবেন।
যেমন একজন টি-শার্ট ই-কমার্স বিজনেস মেন এর সাথে আপনার ডিল হয়েছে যদি আপনি তার একটি টি-শার্ট বিক্রি করতে পারলে সে ১০০ টাকা কমিশন দিবেন আপনাকে। তখন আপনি একটি ওয়েবসাইট খুলে সেখানে উক্ত ই-কমার্স ওয়েবসাইটের টি-শার্টের ভালো খারাপ দিকগুলো উল্লেখ করে ক্রেতাকে ঐ ই-কমার্স থেকে পণ্য কিনতে আগ্রহী করে তুলবেন এটিই এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
সবচেয়ে জনপ্রিয় ই-কমার্স এ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট হলো Amazon.com। আপনি চাইলে কোন পণ্যের একটি রিভিউ ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে তা আপলোড করেও এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন।
যদি আপনার এমন একটি ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল থাকে যেটিতে অনেক বেশি ভিজিটরস বা ভিউয়ারস আসে প্রতিদিন তখন আপনার চ্যানেল বা ওয়েবসাইট বিভিন্ন জায়গা থেকে sponsor পাবে।
- Tik Tok থেকে ইনকাম | টিকটক থেকে প্রতিদিন 1000 টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়
- মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করার কয়েক টি সহজ উপায়
অর্থাৎ আপনি যাদের থেকে sponsor পাবেন তাদের নিয়ে একটি পোস্ট বা ভিডিও বানালেই আপনাকে তারা টাকা দিবেন। এক্ষেত্রে তখন আপনাকে আর গুগল এডস এর উপর নির্ভর করতে হয় না কারন sponsor থেকেই আপনি অনেক টাকা আয় করতে পারেন
এগুলোই হলো গুগল ব্যবহার করে আয় করার প্রধান এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায়।
চলুন জেনে আসি গুগল থেকে আয় সম্পর্কিত প্রশ্ন এবং উত্তর
গুগল এডসেন্স থেকে মাসে কত টাকা আয় করা যায়?
উত্তরঃ- গুগল এডসেন্সের এর থেকে মাসে কত টাকা আয় করা যায় তা নির্ভর করবে আপনার ভিসিটরস বা ভিউয়ারস এর লোকেশন এবং সংখ্যার উপর আবার আপনার কন্টেন্টের উপরও নির্ভর করে তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে এই পোস্টি পড়ুন।
ওয়েবসাইটের জন্য বেস্ট এডসেন্স অলটারনেটিভ কি?
উত্তরঃ- এডসেন্সের বেস্ট অলটারনেটিভ বলা যায় media.net কে। যদিও এই প্ল্যালফর্মে এপ্রুভাল নেওয়া আরো বেশি কষ্টকর কারণ এটি USA ভিত্তিক এড নেটওয়ার্ক।
এপ এর জন্য বেস্ট এডমোব অলটারনেটিভ কি?
উত্তরঃ- এপ এর জন্য এডমোব ই বেস্ট তার অলটারনেটিভ প্রয়োজন হয় না।এডমোব এর সবচেয়ে জনপ্রিয় অলটারনেটিভ গুলো হলো Facebook ads, Unity ads।
কোন টপিক নিয়ে কন্টেন্ট বানালে বেশি ইনকাম করা যায়?
উত্তরঃ- হেল্থ, টেকনোলজি ইত্যাদি বিষয় গুলো নিয়ে কন্টেন্ট বানালে ভালো ইনকাম করা যায় তবে যেই টপিক নিয়েই বানান ইংরেজি টপিকেই ভালো আয় হয়।
ইউটিউব/ওয়েবসাইটে ভিজিটর/ভিউয়ারস বাড়ানোর জন্য কি করতে হবে?
উত্তরঃ-ইউটিউব ভিডিওতে ভিউস বাড়াতে হলে আপনার ভিডিওকে অপটিমাইজড করতে হবে এসইও করতে হবে। ওয়েবসাইটের জন্য আর্টিকেলকে ভালো ভাবে অপটিমাইজ করে এসইও করতে হবে।
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি শুধু ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর সাথে করা যায়?
উত্তরঃ- না। কিছু কিছু ওয়েবসাইট আপনাকে আপনার নিশ বেসড প্রোডাক্ট দিবেন।যেমনঃ- clickbank.com, warriorplus.com।
ওয়েবসাইট তৈরি করতে কত টাকা খরচ হয়?
উত্তরঃ- ওয়েবসাইট ফ্রীতেও তৈরি করা যায় আবার টাকা দিয়েও তৈরি করা যায়। তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে এই পোস্টটি পড়ুন।
ধৈর্য রাখবেন সবসময়। চেষ্টা করবেন আপনার অডিয়েন্সকে সন্তুষ্ট করতে তাদের উপকার করতে তবেই আপনার আয় হবে।
কখনো শর্ট কাট খুজবেন না। গুগল এডসেন্সের অলটারনেটিভ অনেক নেটওয়ার্ক ও আছে কিন্তু সেগুলো থেকে আমনি ভালো কিছু করতে পারবেনা না।
এমন কিছু করবেন না যা গুগলের পলিসির বাইরে।
নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবেন কন্টেন্ট ভালো করার।
ইনভেলিড ক্লিক করবেন না। নতুনরা নিজে নিজে ক্লিক করে আয় করতে চায়। মনে রাখবেন গুগল আপনার আমার চেয়েও অনেক চালাক।
সবকিছু শিখে, জেনেশুনে তারপরেই ই প্ল্যাটফর্মে আসবেন না হয় ব্যর্থ হয়ে হতাশায় পড়তে হবে।
আপনাদের সাথে গুগল থেকে আয়ের সকল বিষয় শেয়ার করা হয়েছে এই পোস্টে। আপনার গুগল থেকে আয়ের কোন বিষয়টি ভালো লেগেছে এবং কোনটি ভবিষ্যতে করতে চান তা অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।
যদি আপনার থেকে আমাদের চেয়েও ভালো আইডিয়া থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের সাথে শেয়ার করুন। ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ?