বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব। বর্তমান সময়ে যারা বিদেশ কাজ করছেন। তারা সকলেই মাসে মাসে রেমেনটেন্স আয় করে থাকেন।
বিদেশ প্রবাসীদের অর্জিত রেমিটেন্স বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠিয়ে দিতে চাই আমাদের বাংলাদেশ। আর সেজন্য বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম তাদের জেনে নেয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর নিয়ম না জানলে, আপনার ইনকাম করার টাকাগুলো দেশে পাঠাতে পারবেন না।
আর বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর নিয়ম অনেক সহজ। বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আজকের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
বিদেশ প্রবাস কর্মী বাংলাদেশ সরকার হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের প্রায় ১৬৮ দেশে বাংলাদেশের কর্মীরা বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজ করে যাচ্ছে। যার সংখ্যা এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি।
প্রতিটি কর্মে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন কাজে অবস্থান করছেন। আর দিনের পর দিন তারা বিভিন্ন কাজ করে মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণের বিদেশী রেমিটেন্স ইনকাম করে থাকে। যা ইনকাম করা টাকা বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থান সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে থাকে।
যারা অনেকদিন ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন। তারা অনেকে জানেন বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম। কিন্তু যারা নতুন অবস্থায় বিদেশ অবস্থান করছেন। তারা অনেকেই বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম জানেন না।
আপনি যখন প্রথম বেতন পাবেন বিদেশ থেকে, তখন আপনার বাংলাদেশের থাকা আত্মীয়-স্বজন বা প্রিয় মানুষদের নিকট সেটা টাকা অবশ্যই পাঠিয়ে দিবেন।
অনেক সময় পাঠানোর দরকার হয় কারণ আমাদের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন খুব একটি ভালো হলো বিগত দিনে এতটা ভাল ছিল না।
আর বেশিরভাগ মানুষ অভাবের কারণে বিদেশ অবস্থান করছে কাজের জন্য। থাকা শেষে তাদের ইনকাম করার টাকাগুলো কিভাবে দেশে পাঠাবে সেটি নিয়ে অনেকে চিন্তিত থাকে।
বিশেষ করে বিদেশ থেকে বাংলাদেশের টাকা পাঠানোর অনেক উপায় রয়েছে। কিছু কিছু উপায় জটিল এবং কিছু কিছু উপায় অনেক সহজ। কিন্তু এই সকল নিয়মের মধ্যে বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম আজকে আমরা বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।
আমাদের লেখা আলোচনা অনুসরণ করার পরে আপনারা সহজেই বিদেশ থেকে বাংলাদেশের নির্দিষ্ট ব্যাংকে টাকা পাঠিয়ে সরকার কর্তৃক 2 পার্সেন্ট বোনাস উপভোগ করতে পারবেন।
টপিক সূচিঃ
বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
আপনি যদি বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠাতে চান। তাহলে আপনি বাংলাদেশের যে ব্যাংকের টাকা পাঠাবেন বিদেশে অবস্থানরত সে ব্যাংকের যে কোন মানি এক্সচেঞ্জ অফিসে যাবেন।
এরপর আপনার টাকা জমা দিবেন, তাদের দেওয়া একটি কেওয়াইসি ফর্ম পূরণ করতে হবে।
কেওয়াইসি ফর্মে মূলত আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যেমন- আপনার পাসপোর্ট, ভিসা পারমিট তথ্য। এবং আপনি যে ব্যাংকে টাকা পাঠাবেন সে ব্যাংকের তথ্য যেমন- ব্যাংকের নাম্বার, ব্যাংকের শাখার নাম্বার, ব্যাংকের ঠিকানা ইত্যাদি যুক্ত করতে হবে।
তারপর অনেক ব্যাংক একটি গোপন পিন নাম্বার দিয়ে থাকে, যে পিন নাম্বারটি দেশে থাকা আপনার যে কোন একজন ব্যক্তির কাছে দিয়ে দিবেন। তাকে বলবেন পিন নাম্বার দিয়ে টাকাটি তুলতে হবে।
সকল ব্যাংকের ক্ষেত্রে, এ পিন নাম্বারটি ব্যবহার না করাও লাগতে পারে। তো এ নিয়ম অনুসরণ করে আপনারা খুব সহজেই দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠাতে পারবেন।
বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর জন্য মানি এক্সচেঞ্জ অফিস
বিদেশ প্রবাসীরা খুব সহজে এবং সুবিধাজনক পদ্ধতিতে অনুমোদিত ও তালিকাভুক্ত বিদেশী ব্যাংক, মানি ট্রান্সফার অর্গানাইজেশন। এবং মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের টাকা পাঠিয়ে দিতে পারবেন।
আর এই জন্য আপনি যে ব্যাংকে টাকা পাঠাবেন বিদেশে সে ব্যাংকের মানি এক্সচেঞ্জ হাউস, মানি ট্রান্সফার অর্গানাইজেশন অফিসগুলোতে, যোগাযোগ করবেন।
আপনি যে ব্যাংকে টাকা পাঠাবেন সে ব্যাংকের অনলাইন ওয়েবসাইটে গিয়ে, তাদের সমর্থিত ফরেন ব্যাংক মানি ট্রান্সফার অর্গানাইজেশন বা মানি এক্সচেঞ্জ হাউজ গুলোর লিস্ট দেখতে পারবেন।
বিদেশ থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
আপনি যদি বিদেশ প্রবাসী হয় ডাচ-বাংলা ব্যাংকে টাকা পাঠাতে চান? সেক্ষেত্রের ডাচ-বাংলা ব্যাংক সমর্থিত বিদেশে অবস্থানরত যে কোন মানি এক্সচেঞ্জ অফিসে গিয়ে কেওয়াইসি ফরম পূরণ করে আপনার টাকা বাংলাদেশে পাঠাতে পারবেন।
ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড টাকা পাঠানোর একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। বর্তমানে সকলের নিকট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড।
বাংলাদেশে অন্যান্য যে ব্যাংকগুলো রয়েছে তার সবগুলোর মধ্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংক তোলনামূলক ভালো সেবা প্রদান করে থাকে। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং এ যদি আপনি বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতে চান।
তাহলে সরাসরি প্রণোদনা হিসেবে আরো এক পারসেন্ট বেশি মানে মোট টাকার সাথে ৩ পার্সেন্ট বোনাস পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে দেখা যায় অন্যান্য ব্যাংকগুলো আপনাকে ২ পার্সেন্ট বোনাস দেবে।
বিদেশ থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকে টাকা পাঠানোর জন্য আপনাকে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সমস্ত কিছু মানি এক্সচেঞ্জ অফিস ঠিকানা খুঁজে বের করতে হবে। এছাড়া বিদেশ অবস্থানরত এই সকল মানি এক্সচেঞ্জ অফিস লোকেশন আপনাকে খুজতে হবে।
ডাচ বাংলা ব্যাংক মানি এক্সচেঞ্জ হাউজ গ্লোবাল পার্টনার হচ্ছে-
- আল আনসারী এক্সচেঞ্জ এলএলসি গ্লোবাল পার্টনার
- BFC ব্যাংক লিমিটেড (EZRemit)
- চয়েস মানি ট্রান্সফার ডিবিএ স্মল ওয়ার্ল্ড
- মার্চেন্টেড এশিয়া এসডিএন। Bhd.
- মানিগ্রাম পেমেন্ট সিস্টেম ইনক.
- এনইসি মানি ট্রান্সফার লিমিটেড
- প্রভু মানি ট্রান্সফার
- রিয়া ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস
- ট্রান্সফাস্ট রেমিট্যান্স এলএলসি
- টেরা পেমেন্ট সার্ভিস
- ইউএই এক্সচেঞ্জ সেন্টার এলএলসি
- ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন মানি ট্রান্সফার
- ওয়ার্ল্ড রেমিট লিমিটেড ইত্যাদি।
উপরে উল্লেখিত কোম্পানি গ্লোবাল যা সারাদেশে সমর্থন করে। কিন্তু এর বাইরে কিছু কিছু দেশ রয়েছে যেগুলো এসব মাধ্যমগুলো সাপোর্ট করে না।
যে সকল মাধ্যম গুলো দেখার জন্য আপনার ডাচ বাংলা ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের মানি এক্সচেঞ্জ পার্টনার গুলো দেখে নিতে হবে।
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা আপনারা উপরে উল্লেখিত আলোচনা অনুসরণ করে জানতে পারলেন বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম গুলো। আপনাকে সব সময় একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে সেটি হল বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়মটা বলা হয়েছে, যা প্রতিটি ব্যাংকের ক্ষেত্রে একই নিয়ম।
আপনি যে ব্যাংকে টাকা পাঠাবেন সেই ব্যাংকের সমর্থিত বিদেশে অবস্থানরত মানি এক্সচেঞ্জ অফিস খুঁজে বের করতে হবে।
তারপর সেখানে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার আপনার টাকার পরিমান, আপনার নাম, ঠিকানা এবং কোন ব্যাংকে টাকা পাঠাবেন সে ব্যাংকের শাখার কোড ইত্যাদি যুক্ত করতে হবে।
প্রতিটি ব্যাংকের ক্ষেত্রে একই নিয়ম তাই আলাদা করে বলার কোন কারণ নেই।
এখন আপনি বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতে চাইলে, যে কোন পছন্দের ব্যাংকে টাকা পাঠিয়ে দিতে পারেন।