ডিমের ব্যবসা আইডিয়া : আমাদের বাংলাদেশে ডিমের ব্যবসা নতুন কিছু নয়। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই ডিমের ব্যবসা। আপনি যদি পড়াশোনা করেও শিক্ষিত অবস্থায় বেকার বসে থাকেন।
তারা হতাশায় না ভোগে, বাংলাদেশে অবস্থান করে ডিমের ব্যবসা আইডিয়া বেছে নিতে পারেন। আপনারা খুবই অল্প পরিমাণের টাকা ইনভেস্ট করে, এই ডিমের ব্যবসাটি শুরু করে দিতে পারবেন।
তাই যারা লেখাপড়া শেষ করে চাকরি পাচ্ছেন না তাদেরকে পরামর্শ ডিমের ব্যবসা শুরু করে দিন। কারণ ডিমের ব্যবসা করতে পারলে ভালো পরিমাণের লাভবান হওয়া যাবে।
ডিমের ব্যবসা মানে শুধুমাত্র দোকানের বা ফ্রামে ডিম বিক্রি করা নয়। আপনি বিভিন্ন বেকারিতেও ডিম সাপ্লাই দিতে পারবেন।
তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাকে সম্পূর্ণভাবে জানিয়ে দেবো ডিমের ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে। কিভাবে ডিমের ব্যবসা শুরু করে লাভজনক হবেন।
এখন ডিমের ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের লেখাটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
আমরা জানি ডিম জনপ্রিয় আমিষ জাতীয় খাবার। প্রতিবেলায় খাবারের সময় ডিম থাকে। ডিম সহজলভ্য, দামে কম আর রান্না করতেও তেমন কোন ঝামেলা নেই। তাই লোকেরা ডিম খাবার পছন্দ করে। তাই এক কথায় বলা যায় ডিম নিয়ে ব্যবসা শুরু করলে অবশ্যই লাভজনক হবেন।
টপিক সূচিঃ
ডিমের ব্যবসা আইডিয়া – ডিমের ব্যবসা শুরু করে লাভজনক হোন
তো আপনার যারা ডিমের ব্যবসা শুরু করতে চান, তাদেরকে অবশ্যই, ব্যবসা করার নিয়ম জানতে হবে, কি পরিমাণে প্রতি প্রয়োজন হবে সে বিষয়ে জানতে হবে। কেমন লাভ হবে তার খুঁটিনাটি জানতে হবে।
তাই চলুন আর সময় নষ্ট না করে, ডিমের ব্যবসা শুরু করে কিভাবে লাভজনক হওয়া যায়। সে বিষয়ে জেনে আসে।
ডিমের ব্যবসা শুরু করার নিয়ম
যে কোন ব্যবসার শুরু করার আগে ব্যবসা নিয়ে একটি ভালো পরিকল্পনা করতে হয়। নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা করার জন্য, আমরা এখানে কিছু নিয়ম উল্লেখ করেছি। সে নিয়া অনুযায়ী কাজ করতে পারলে আপনারা ডিমের ব্যবসায়ী সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন সেটি নির্ধারণ করুন-
- আপনি কি দোকানের মাধ্যমে ডিমের ব্যবসা শুরু করবেন। নাকি রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ডিম বিক্রি করবেন।
- আপনি চাইলে বড় বড় বেকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডিম সাপ্লাই দিতে পারবেন।
- বড় বড় হোটেল রেস্টুরেন্ট বা মুদির দোকানে সাপ্লাই দিতে পারবেন।
- আপনি চাইলে ডিম সিদ্ধ করেও বিক্রি করতে পারবেন।
বন্ধুরা আপনারা কোন মাধ্যমে, ডিম ব্যবসা শুরু করবেন। এ বিষয় নিয়ে চিন্তা করছেন। তাহলে আর চিন্তা করার কারণ নেই আমরা আপনাকে সঠিক পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করব।
আমরা জানি বাজারে, বর্তমানে তিন ধরনের ডিম পাওয়া যায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, মুরগির ডিম, হাঁসের ডিম এবং কোয়েল পাখির ডিম। বিশেষ করে আমাদের মধ্যে যারা পেশারের রোগী রয়েছে, তারা হাঁসের ডিম পছন্দ করে না।
তাই বেশিরভাগ মানুষ ফার্মের মুরগির ডিম, এবং দেশের মুরগির ডিম পাশাপাশি কোয়েল পাখির ডিম খেতে বেশি পছন্দ করে। এক্ষেত্রে পুষ্টিগুণের তুলনায় বলা যায়, হাঁসের ডিম এবং মুরগির ডিমের তুলনায় কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি।
তাই আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কোন ধরনের ডিম নিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন। তবে আপনারা চাইলে এই তিন ধরনের ডিম নিয়ে প্রাথমিকভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
পুঁজি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
ডিমের ব্যবসা শুরু করতে আহামরি তেমন পুঁজি দরকার পড়ে না। বেশি ইনভেস্ট করার সামর্থ্য না থাকলে আপনারা অল্প টাকা ইনভেস্ট করেও, ডিমের ব্যবসা শুরুতে ঝুড়িতে করে ডিম বিক্রি শুরু করতে পারেন।
যখন আপনার ইনভেস্ট করার সামর্থ্য আসবে তখন একটি ভ্যান গাড়িতে করে ডিমের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আর আপনার টার্গেট যদি বড় হয়, সে ক্ষেত্রে একই দোকানের মাধ্যমে ডিম বিক্রির ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
ডিম ব্যবসায়ী দোকান সাজানো এবং কর্মচারীর পিছনে তেমন খরচ নেই। মোটামুটি ৩০ হাজার থেকে 50 হাজার টাকা ইনভাইট করে ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।
আর যদি আপনি বড়সড়ো করে একটি ডিমের ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের যে কোন ব্যবসার শুরু করার সময় ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হয়।
ট্রেড লাইসেন্স না থাকলে, ব্যবসায়িক লেনদেন করতে সরকারিভাবে বাধা আসবে। আবার বড় কোন কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়া যাবে না।
ব্যবসার জন্য কিভাবে ট্রেড লাইসেন্স করবেন?
আপনি ডিম ব্যক্তির ব্যবসার জন্য একটি ট্রেড লাইসেন্স করতে চাইলে। সরাসরি আপনার এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ বা সিটি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান করতে ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করে নিতে পারবেন।
ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স করতে গেলে, সরকারি ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা ফ্রি দিতে হবে। তাহলে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে একটি ট্রেড লাইসেন্স পেয়ে যাবেন।
ডিমের দোকান সাজানো
ডিমের ব্যবসা দোকান সাজানো নিয়ে কোন ঝামেলা থাকে না। কারণ ডিমের দোকানে এত সাত ছজের প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র খামার থেকে ডিম এনের দোকানে দোকানে গিয়ে দেয়া হয় জন্য, বেশি সময় বা বেশি দিন ডিম দোকানে থাকে না।
বিভিন্ন খামার থেকে ডিম সংগ্রহ করে, সেগুলো পিকআপ বা ভ্যান গাড়ি দিয়ে নিজের দোকানে নিয়ে আসতে হবে। তারপর সেখান থেকে বিভিন্ন দোকানের ডিম সরবরাহ করতে হবে। তবে ডিম ব্যবসা করার জন্য আপনার দোকানটি অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
অনলাইন বা ফুটপাতে ডিম বিক্রি
বর্তমান সময়ে প্রায় সকল জিনিস অনলাইনে কেনাবেচা হয়। এদিক থেকে আপনি যদি ডিম বিক্রি অনলাইনের মাধ্যমে করতে চান তাহলে সেই সুবিধাটি পাবেন।
কিন্তু এ ব্যবসাটি কখনো অনলাইনে এত প্রচলিত হয় না। কিন্তু শহর অঞ্চলে ফুটপাতে ডিম বিক্রির ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। ফুটপাতে বসে ঝুড়িতে করে ডিম বিক্রি করে, অনেক লাভজনক হওয়া যায়।
আপনারা ফুটপাতে ঝুড়ি ছাড়াও একটি ভ্যানে করে সিদ্ধ ডিম উভয় বিক্রি করার সুবিধা পাবেন। একটা ডিমের তুলনায় সিদ্ধ ডিম বিক্রি করলে বেশি লাভজনক হওয়া যাবে।
কারণ রাস্তার ধারে বিভিন্ন লোকজন বেশি জমা হয়ে থাকে। তারা খাবারের জন্য এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর পেট ভরে খাওয়ার জন্য সেদ্ধ ডিম খায়।
ডিম বিক্রি বৃদ্ধির উপায়
যেকোনো ব্যবসার বেশি বেশি প্রচারে প্রসার ঘটে। তাই নতুন ব্যবসায় নামার পরে প্রচারণার বিষয়টি জোরদার করতে হবে। বিভিন্ন হোটেলম রেস্টুরেন্ট সহ বিভিন্ন মুদি দোকানের মালিকদের সাথে পরিচিত হতে হবে। তাহলেই আপনার ডিম বিক্রি বৃদ্ধি বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
আর নির্দিষ্ট পরিমাণের ডিম আপনি যদি অল্প লাভে, মানুষের কাছে বিক্রি করতে পারেন। তাহলে আপনার ডিম গুলো কাস্টমার কিনতে আগ্রহী থাকবে। মনে করুন আপনি চারটা ডিম 50 টাকা দিয়ে কিনেছেন। এখন 50 টাকা বিক্রি করলে তো আপনার লাভ হবে না।
তাই আপনারা চারটা ডিম ৫০ টাকায় কিনে সেটি যদি 60 টাকাতে বিক্রি করেন। তাহলে আপনার ডিম কিনতে কাস্টমার আগ্রহী থাকবে। এক্ষেত্রে আপনি যদি 50 টাকার ডিম ১০০ টাকা বিক্রি করতে চান। তাহলে কিন্তু কাস্টমার আপনার ডিম গুলো কিনতে আসবে না।
শেষ কথাঃ
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের জানিয়ে দিলাম, কিভাবে ডিম বিক্রি করতে হয় এবং কি পরিমানের টাকা ইনভেস্ট করে ডিমের ব্যবসা শুরু করা যায়।
এখন আপনি যদি আমাদের আলোচনা অনুসরণ করে, ডিমের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তাহলে দ্রুত সময় লাভজনক হতে পারবেন।
ধন্যবাদ।